খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকতে দিয়েছি, এটাই কি বেশি না: প্রধানমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৮ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:১৬ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে যে কারাগার থেকে বাসায় থাকতে দিয়েছি, চিকিৎসা করতে দিয়েছি এটাই কি বেশি না?
তিনি বলেন, আপনাকে যদি কেউ হত্যা করার চেষ্টা করতো আপনি কি তাকে গলায় ফুলের মালা দিয়ে নিয়ে আসতেন? বা আপনার পরিবারকে যদি কেউ হত্যা করতো, আর সেই হত্যাকারীকে যদি কেউ বিচার না করে পুরষ্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিতো তাদের জন্য আপনি কী করতেন?
বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, সাবেক বিরোধী দলীয় নেতার চিকিৎসার বিষয়টি এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে এ বিষয়ে আপনি কোনো পদক্ষেপ নেবেন কিনা? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, তার যতটুকু ক্ষমতা তিনি করেছেন, এখন এটি আইনের ব্যাপার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি থাকতে হত্যাকারীকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইলেকশনে ভোট দিয়ে পার্লামেন্টে বসাল, যেখানে আমি বিরোধী দলের নেতা ছিলাম সেখানে বসালো কর্নেল রশিদকে। খালেদুজ্জামান আসামি, তার মামলার রায় হবে চাকরি নেই। ক্ষমতায় এসে সেই আসামিকে চাকরি দিল ফরেন মিনিস্ট্রিতে, অ্যাম্বাসেডর করে পাঠাল। পাশা একজন খুনি, সে সেনাবাহিনীর অফিসার ছিল, মারা গেছে, মৃত ব্যক্তিকে ক্ষমতায় এসে প্রমোশন দিয়ে তার সমস্ত অবসর ভাতা টাতা সব দিয়ে দিল।
তিনি বলেন, আর গ্রেনেড হামলার পর বলা হলো, আমি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে নিজেই নিজে আত্মহত্যা করতে নিজেকে মেরেছিলাম। কোটারিপাড়ার যে গ্রেনেড হামলা সেটার আগে তারা কী বলেছিল? বলেছিল শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। ভেবেছিল তো মরেই তো যাব। এখন ‘রাখে আল্লাহ মারে কে? আর মারে আল্লাহ রাখে কে?’ আমার বেলায় সেটা হচ্ছে যে, রাখে আল্লাহ মারে কে? তারপরেও আবার খালেদা জিয়ার জন্য এতো দয়া দেখাতে আমাকে বলেন, কেউ এই প্রশ্ন করলে আমার মনে হয় আপনাদের একটু লজ্জা হওয়া উচিত। যারা আমার বাবা, মা, ভাই, আমার ছোট ভাই রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করেছে। তার পরেও আমরা অমানুষ না। অমানুষ না দেখেই তাকে আমরা অন্তত তার বাসায় থাকার ব্যবস্থাটুকু আমার এক্সিকিউটিভ অথোরিটি যতটুকু আছে আমি সেটুকু দিয়ে তাকে বাসায় থাকার চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাকিটা আইনগত ব্যাপার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রেনেড হামলার পরে আমরা এতোজন আহত আমাদের ২২ জন মানুষ মারা গেছে, পার্লামেন্টে আমাদের আলোচনা করতে দেয়নি। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারিনি। এতো বড় অমানবিক যে তাকেও আমি মানবতা দেখিয়েছি আমার হাতে যতটুকু ক্ষমতা সেটুকু আমি দেখিয়েছি আর কত চান? আর কত চান আমাকে বলেন?