আপনাদের কর্মকাণ্ডে জাতি উৎকণ্ঠিত : কুষ্টিয়ার এসপিকে হাইকোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:০৮ পিএম, ২৫ জানুয়ারী,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:১১ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে কথায় নয় কাজে দক্ষ হতে বলেছেন হাইকোর্ট। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহারের’ ঘটনায় সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে নিজের ব্যাখ্যা দিতে সশরীরে হাইকোর্টের উপস্থিত হলে এসপিকে আদালত এ কথা বলেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসপির ব্যাখ্যার শুনানি করেন।
এ সময় এস এম তানভীর আরাফাতকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, পুলিশকে কথায় নয় কাজে পটু হতে হবে। কে কোন মতাদর্শের, কোন দলের সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। সর্বস্তরের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই পুলিশের দায়িত্ব। পুলিশের কর্মকাণ্ডে জনগণের মধ্যে যেন ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করতে হবে আপনারা জনগণের বন্ধু। পত্র-পত্রিকায় যা দেখলাম, তা যদি কুষ্টিয়ার বাস্তব অবস্থা হয়, তা হবে জাতির জন্য ভয়ংকর। জনগণ যেন মনে না করে দেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। জাতি উৎকণ্ঠিত, এটা নিরসন করার দায়িত্ব পুলিশের।
জুডিশিয়ালির মর্যাদা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব বলেও মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ সময় এসপি বার বার আদালতের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মাই লর্ড, মাই লর্ড বলতে থাকেন। এর আগে হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এসপি তানভীর। এরপর তা আদালতে উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী আহমেদ ইশতিয়াক। এসপির পক্ষে শুনানি করেন মনসুরুল হক চৌধুরী।
আদালত ক্ষমার আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। একইসঙ্গে আদালত এসপিকে বলেছেন, আমাদের এই মনোভাব আগামী দিনের আপনার কর্মকাণ্ডে কতটা প্রতিফলিত হয়েছে, সেটা দেখতে চাই। একইসঙ্গে তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সাময়িক সময়ের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আদালত অবমাননার মামলায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনে এসপি বলেছেন, তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি। তাই এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হবেন। এ ধরনের ভুল আর কখনও হবে না বলেও আবেদনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
আবেদনে তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের জন্য আমার মনে সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখানোর কথা দূরে থাক, বরং বিচার বিভাগের দেওয়া কাজে নিয়োজিত হতে পারলে নিজেকে সম্মানিত বোধ করি। এ ঘটনায় আমি মনের গভীর থেকে অনুতপ্ত। এজন্য আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।