স্থানীয়রা চেনেন মিয়া বাড়ি হিসেবে
শাশুড়িকেও বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি দেন মতিউর
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ জুন,রবিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:০২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
শুরুটা কোরবানির ছাগল কেনা দিয়ে। তাও আবার যেনতেন ছাগল নয়, ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে মুসফিকুর রহমান ইফাত ওই ছাগলের সঙ্গে ছবি দিয়ে ভাইরাল হন। এরপর একে একে বেরিয়ে আসে তার অঢেল অর্থ-সম্পত্তির খবর। এবার প্রকাশ্যে এলো সেই ছেলে ইফাত ও স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবুর অনুরোধে ফেনীর সোনাগাজীতে মতিউরের শাশুড়িকে একটি বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি বানিয়ে উপহার দেওয়ার তথ্য।
মতিউর রহমানের শ্বশুরবাড়ি সোনাগাজী উপজেলার সোনাপুর এলাকায়। প্রায় ১০ বছর আগে তৈরি ওই বাড়িটিকে স্থানীয়রা মিয়া বাড়ি হিসেবে চেনেন।
মতিউরের বানিয়ে দেওয়া বিলাসবহুল বাড়িটি জসিম উদ্দিন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি দেখাশোনা করেন। তিনি বলেন, ১০-১২ বছর ধরে তিনি এ বাড়ি দেখাশোনা করছেন। সর্বশেষ দুই মাস আগেও এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান, স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবু, ছেলে মুসফিকুর রহমান ইফাত ও শাশুড়িকে নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। দুদিন থাকার পর আবার ঢাকায় ফিরে যান। মতিউরের শাশুড়ি বর্তমানে ঢাকায় মেয়েদের বাসায় ও বাড়িতে আসা-যাওয়ার ওপর থাকেন। তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, গত বছর ঈদে মতিউরের ছেলে ইফাত কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি গরু ও দুটি ছাগল কিনে ঢাকায় কোরবানি দিয়েছেন। আর চারটি গরু নানার বাড়িতে নিজে এসে জবাই করে আত্মীয় ও গরিবদের মধ্যে বিতরণ করেছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, মতিউর রহমান ও তার শ্যালক মো. নকিবের নামে ফেনী ও সোনাগাজীতেও বেশ কিছু জমি রয়েছে, যা মতিউরের স্ত্রী শাম্মী আখতারের চাচাতো ভাই মো. আরিফুর রহমান তাদের কিনে দিয়েছেন। তিনি এ সম্পত্তি দেখাশোনা করেন।
আরিফুর রহমান বলেন, এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর তার চাচাতো বোনের স্বামী। মুসফিকুর রহমান ইফাত তাদের সন্তান। শাম্মী আখতারের এক বোন ও এক ভাই রয়েছে। ২৫ বছর আগে মতিউরের সঙ্গে শাম্মী আখতারের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর শাম্মী আখতারের বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা মিল্লাত মিয়া মারা যান। এরপর শাম্মীর অনুরোধে মতিউর শাশুড়ি, শ্যালিকা লাভলী আক্তার ও শ্যালক মো. নকিবকে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে লাভলীকে পড়ালেখা শেষে বিয়ে দেন। আর নকিবকে বাসায় রেখে লেখাপড়া করান। সম্প্রতি নকিব চীন থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে এসে ব্যবসা ও চাকরি শুরু করেন। বর্তমানে তারা রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় নিজস্ব বাসায় থাকেন। তবে স্থানীয়রা বলছে, শ্যালক নকিব ঢাকাসহ বিদেশে মতিউরের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আনুষঙ্গিক কাজকর্ম দেখাশোনা করেন।
গতকাল সকালে মিয়া বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দৃষ্টিনন্দন ডুপ্লেক্স বাড়িটির দরজা বন্ধ। ঘরে কেউ নেই। মতিউরের শাশুড়িকে উপহার দেওয়ার বিষয়ে শাম্মী আখতারের চাচাতো ভাই ও আমিরাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান, সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল হক হিরন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি