avertisements 2

ইতিহাস গড়েই জিতল পাকিস্তান

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১১ অক্টোবর, বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:৫৬ এএম, ৪ মে,শনিবার,২০২৪

Text

মেন্ডিস-বিক্রমাময় শ্রীলংকার প্রথম ইনিংস যখন শেষ হয়,তখন অনেকেই পাকিস্তানের সম্ভাব্য পরাজয় দেখে ফেলেছিলেন। দেখারই কথা। ৩৪৪ রান করে ম্যাচ জেতার নজির যে বিশ্বকাপের গত বারো আসরে একটিও নেই।জিততে হলে নতুন রেকর্ড গড়তে হতো '৯২ এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। এরপরেও যারা স্বপ্ন দেখছিলেন তাদেরও অনেকে হয়তো আশা ছেড়ে দেন ইনিংসের ১০ ওভার পেরুনোর আগে ইমাম উল হক ও মূল ভরসা বাবর আজম সাজঘরে ফিরলে।

তবে আশা ছাড়েননি ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও চারে ব্যাট করতে নামা রিজওয়ান।চাপের মুখে দুজনই খেলেছেন নিজেদের ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য সেরা ইনিংসটি। এই দুই তারকার অনবদ্য শতকে শ্রীলংকার বিপক্ষে রেকর্ড রান তাড়া করে বিশ্বকাপের টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান।শ্রীলংকার দেয়া ৩৪৪ রানের টার্গেট ১০ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেই বাবর আজমের দল।

বড় রান তাড়ায় শুরুতে ধাক্কা খাওয়া পাকিস্তান রিজওয়ান-শফিকের ব্যাটে চড়ে ম্যাচে ফেরে।
এই দুইজন যখন ক্রিজে একত্রিত হন,তখন ৩৭ রানে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে পাকিস্তান। চাপ সামলে এই দুইজন অসাধারণ এক জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন।প্রথমে কিছুটা দেখেশুনে ব্যাটিং করলেও পরে সময়মত আগ্রাসী হন দুজনেই।তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে যোগ করেন ১৭৬ রান। ১০৩ বলে ১১৩ রান শফিক যখন আউট হলেন তখন পাকিস্তান অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থায়।বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি পাওয়া শফিকের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১০ চার ও ৩ ছক্কায়।

এরপর সউদ শাকিলকে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন রিজওয়ান। শাকিল আউট(৩১) হলেও হার না মানা ১৩০ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন পাকিস্তানি এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। ওয়ানডেতে এটি রিজওয়ানের তৃতীয় শতক,ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি খেলার পথে রিজওয়ান মেরেছেন আটটি বাউন্ডারি ও তিনটি ছয়।শ্রীলঙ্কার হয়ে ৬০ রান খরচায় দুটি উইকেট শিকার করেন মাদুশাংকা।

এর আগে হায়দ্রাবাদের অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলংকা। ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি শ্রীলংকার। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে হাসান আলীর বলে উইকেট কিপারকে ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেন ওপেনার কুশল পেরেরা।ক্রিজে আসেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুশল মেন্ডিস। আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম শ্রীলংকা হারলেও দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন মেন্ডিস।৪টি চার ও ৮টি বিশাল ছয়ে ৪২ করেছিলেন ৭৬ রান।যেভাবে ব্যাট করছিলেন আর অল্প কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকলে সেদিন দলের হয়ে ম্যাচটা বের করে ফেলতে পারতেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

সেদিন যেখানে শেষ করেছিলেন আজ যেন সেখান থেকেই শুরু মেন্ডিস করলেন। সেই ক্যাচটি দেওয়ার আগে পরে পুরোটা সময় ক্রিজে ছিলেন সাবলীল।তার মারকুটে ব্যাটিংয়ের সামনে সুবিধা করতে পারেনি কোন পাকিস্তানে বোলারই।দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আরেক ওপেনার পাথুম নিশানকে নিয়ে ১০২ রান।ব্যক্তিগত অর্ধশত পূর্ণ করার পর শাদাব খানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নিশানকা।তবে পাকিস্তানকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে তৃতীয় উইকেটে মেন্ডিস-বিক্রমা জুটি।১১১ রান যোগ করতে এই দুইজন খেলেন কেবল ৬৯ বল।

৬৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা মেন্ডিস এদিন বড় কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন। নিজেদের সেরাটা দিয়েও যেন এই লঙ্কান ব্যাটসম্যানকে আটকাতে পারছিলেন না হারিস রউফ-হাসান আলীরা।তবে অতি আগ্রাসী ব্যাটিংই শেষ পর্যন্ত আরও বড় কিছু থেকে বঞ্চিত করে মেন্ডিসকে।হাসন আলীকে টানা তৃতীয় ছয় মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন বাউন্ডারিতে। তার ১২২ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৪ চার ও ৬টি ছক্কায়।

মেন্ডিস আউট হওয়ার পর দ্রুত ফেরেন আশালংকাও।তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে নিয়ে যান সামারাবিক্রমা।উইকেটের চারপাশে দারুণ সব শট খেলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক।শেষ ১০ ওভারে অবশ্য নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে ৩৫০ রানের নিচে আটকে রাখে পাকিস্তান। এরপর ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় গড়ে ইতিহাস।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2