বিয়ের ১৭ বছর পর আনুষ্ঠানিকতা, মাইকিং করে দাওয়াত
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৬ জুলাই,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৪ এএম, ২৩ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৫
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ১৭ বছর আগে। একই গ্রামের প্রতিবেশী মৃত রপপান আলীর মেয়ে হিমেলা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হলেও ওই বিয়ে মেনে নেয়নি উভয়ের পরিবার। তাদের সংসারে এক ছেলে ও কন্যা সন্তান রয়েছে।
হাসিবুল ইসলাম নামে ছেলের বয়স ১২ এবং সাদিয়া জাহান নামে মেয়ের বয়স ৫ বছর। বিয়ের প্রায় ১৭ বছর অতিবাহিত হলেও তাদের মধ্যে আক্ষেপ রয়েই যায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা না হওয়ায়। তবে ১৭ বছর পর ঠিকই করেছেন আনুষ্ঠানিকতা।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) তাদের বিবাহ বার্ষিকীতে ধুমধাম করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন। বরযাত্রী প্রায় ৩ ০০ দাওয়াতিকে খাওয়ানো, সেই সঙ্গে ছিল বাসর ঘরের ব্যবস্থা। আর এই সব কিছুর আয়োজন উপভোগ করেন তার দুই সন্তান। বিকেল ৩টায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সাইফুল ইসলাম শতাধিক বরযাত্রী নিয়ে হাজির হন শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু সেখানে কাউকে না পেয়ে ফিরে যান নিজ বাড়িতে। এরপর দাওয়াতিদেরকে খাওয়ান কাচ্চি বিরিয়ানি। দাওয়াতিদের স্বতঃ:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ গোটা অনুষ্ঠান যেন আনন্দমুখর হয়ে ওঠে।
স্থানীয় মাতব্বর সরোয়ার হোসেন জানান, এ এক ব্যতিক্রমী বিয়ে। গ্রামের সবাই দারুণভাবে উপভোগ করেছেন। দাওয়াতি সবাই পেটপুরে খেয়েছেন। ১৭ বছর পর আনুষ্ঠানিকতা হলেও দম্পতির জন্য দোয়া করেছি। একই এলাকার সাবেক ইউপি মেম্বার ইব্রা জানান, ব্যতিক্রমী বিয়েতে আমার উপস্থিত হবার সুযোগ হয়েছিল। বিয়েটা দারুণভাবে উপভোগ করেছি।
বর সাইফুল ইসলাম জানান, ১৭ বছর আগে প্রতিবেশী হিমেলা খাতুনকে বিয়ে করেছিলাম ভালোবেসে। কিন্তু ওই বিয়ে উভয়ের পরিবার মেনে নেয়নি। দীর্ঘ ১৭ বছরে আমাদের সংসারে দু’টি সন্তানের জন্ম হয়। উভয়ের বাবা মায়ের থেকে আমরা আলাদা থাকলেও দুই সন্তান নিয়ে আমারা ভালোই ছিলাম। তবে আমাদের মধ্যে একটু আক্ষেপ ছিল বিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে না হওয়ায়। তবে দীর্ঘ ১৭ বছর পর হলেও সেই আক্ষেপ ঘুচানো গেছে। বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতাই করতে পেরেছি। ক্ষীর খাওয়ানো থেকে শুরু করে, বরযাত্রী, দাওয়াত করে খাওয়ানো, বাসর সবই ছিল আয়োজনে। বিয়ের আগের দিন মাইকিং করে গ্রামের মানুষকে দাওয়াত করেছিলাম। তারা সবাই এসেছিলেন। দীর্ঘ বছর পর হলেও বিয়েটা আমরা উপভোগ করেছি।
স্ত্রী হিমেলা খাতুনের কষ্ট বাবা-মা বেঁচে না থাকা। তবুও দীর্ঘ ১৭ বছর পর এমন আয়োজনে দারুণ খুঁশি। আমাদের সন্তানেরাও উপভোগ করেছে। ছেলে হাসিবুল ইসলাম এবং মেয়ে সাদিয়া জাহানও বাবার বিয়ের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পেরে দারুণ খুশি।