এক আমের ওজন ৫ কেজি!, দেখার জন্য মানুষের ভিড়
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৭ জুন,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০১:২৬ এএম, ৯ মার্চ,রবিবার,২০২৫

গতকাল রোববার (৫জুন) বিকেল ৫টার দিকে মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে গিয়ে চোখে পড়ল প্রধান ফটকের সামনে মানুষের ভিড়। ভেতরে ঢোকার জন্য তারা প্রহরীকে অনুরোধ করছেন। কিন্তু তিনি গেট খুলতে নারাজ। অনেক অনুরোধের পরও তিনি ভেতরে ঢুকতে দিলেন না কাউকে। কারণ বিকেল হয়ে গেছে। এ সময় আবু তালেব বিশ্বাস নামে এক যুবক মন খারাপ করে বলেন, অনেক শখ ছিল ৫ কেজি ওজনের আম দেখব। মনে হয় তা আর হবে না আজ। শুধু তিনি নন, তার মতো আরও অনেকেই এসেছেন ৫ কেজি ওজনের আম দেখতে।
সংবাদকর্মী পরিচয় দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা মিলল, দৃষ্টিনন্দন সেই ৫ কেজি ওজনের আমের। ছোট্ট একটি গাছ। তাতে ধরে আছে বিশাল বিশাল আম। একেকটির ওজন গড়ে ৪-৫ কেজি। এই আমের নাম ব্রুনাই কিং। এসেছে সুদূর ব্রুনাই দেশ থেকে।
আমটি সম্পর্কে জানতে চাইলে মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক ইমদাদ হোসেন জানান, ‘ব্রনাই কিং আমের চারা মূলত শালিখা উপজেলার আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। তার ভাগনে ব্রনাই থেকে ২০১১ সালে এ জাতের আম গাছের একটি ডাল নিয়ে এসেছিলেন। সেখান থেকেই ব্রুনাই কিং জাতের আমের চারা গোটা জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।’
আমাদের দেশে আম সাধারণত এক কেজি বা তার চেয়ে একটু বেশি ওজনের হয়ে থাকে। কিন্তু ব্রুনাই কিং জাতের আমগুলি ওজনে পাঁচ কেজি পর্যন্ত হয়। ব্রুনাই কিং আম গাছগুলির উচ্চতা ৮-১০ ফুট পর্যন্ত হয়। আকারে ছোট বলে কম জায়গায় অনেক চারা লাগানো সম্ভব।
ব্রুনাই কিং আমগুলি দেখতে অনেকটা পেঁপের মতো লম্বা। কাঁচা অবস্থায় এর রং কালচে সবুজ। সাধারণত শ্রাবণ মাসের শেষের দিকে এই আম পাকে। স্বাদ অনেকটা দেশিয় ফজলি আমের মতো।
মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের কৃষিবিদ মো. মনিরুজ্জামান গনমাধ্যমকে বলেন, ব্রুনাই কিং আম দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মসলা গবেষণা কেন্দ্রে আসছেন অনেকে। তিন বছর আগে মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে ব্রুনাই কিং আমের চারা সংগ্রহ করে অফিসের সামনে রোপণ করেছিলাম। এ বছর তিনটি গাছে ২০-২৫টি আম ধরেছে। প্রত্যকটা আম চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের হয়েছে। অন্য আমের থেকে দেরিতে এই আম পেকে থাকে। তবে যদি বেশি খরা বা রোদ্দুর পড়ে তখন এই আমি একটু তাড়াতাড়ি পেকে যায়। এই আমের স্বাদ প্রায় ফজলি আমের মতোই।
মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ব্রুনাই কিং মূলত সৌন্দর্যবর্ধক আম। সৌন্দর্য পিপাসু মানুষেরা বাড়ির সামনে বা বাসা বাড়িতে ছাদ বাগান তৈরি করে এই জাতের আমগাছের চারা রোপণ করতে পারেন। আমগাছ আকারে ছোট এবং বেশি লম্বা হয় না। তাই অল্প জায়াগার মধ্যে এই আমগাছের চারা রোপণ করা যায়। এখন এই আম দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন। অনেকেই এই জাতের আমগাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নিয়েছেন।