রূপকথার গল্পকে হার মানিয়ে ঝাড়ুদার থেকে হলেন ব্যাংকের এজিএম
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১০:০১ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বাকি সব কর্মকর্তাদের মতো তিনিও প্রতিদিন ব্যাংকে আসতেন। ডিউটিও ছিল সমান সমান। কিন্তু বাকিদের থেকে তার পদ ছিল বড্ড নিচু। ছিলেন ব্যাংকের সুইপার। ঝাড়ু দিয়ে ব্যাংক পরিস্কার রাখাই ছিল তার কাজ। অফিসিয়াল কাজ করার মতো ডিগ্রি তার ছিলো না। কিন্তু সেই ঝাড়ুদার ৩৭ বছর পর হলেন ব্যাংকের অ্যাসিসট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম)।
এভাবেই রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছেন এক নারী। যিনি ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা প্রতীক্ষা তেন্ডুলকার। মুম্বাইয়ে স্টেট ব্যাংকের একটি ব্রাঞ্চে এজিএম হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তিনি। এর আগে ছিলেন সুইপার।
১৯৬৪ সালে পুনের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া প্রতীক্ষার জীবনটা সংগ্রামের। মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর ছাড়তে হয় পড়াশুনা। স্বামী সদাশিব কুডু এসবিআইয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। বিয়ের মাত্র চার বছর পর একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সদাশিবের। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। এরপর এসবিআইয়ের নিয়মে ওই ব্যাংকে সুইপারের চাকরি পান প্রতীক্ষা।
বরাবরই পড়তে ভালোবাসতেন তিনি। বিপদের দিনে কয়েকজন শুভাকাঙক্ষীর সহযোগিতায় পড়াশুনা শুরু করেন তিনি। স্বামীর ব্যাংকের কর্মীরাও সাহায্য করেন প্রতীক্ষাকে। তাই সুইপারের দায়িত্ব পালন শেষে বাকি সময় পড়াশুনা করতে থাকেন তিনি।
সে সময় তার কাছে বই কেনার টাকাও ছিল না। আত্মীয়দের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়তেন। এভাবে ৬০ শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করে নাইট কলেজে ভর্তি হন। এরপর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর নিয়োগ পান ক্লার্ক হিসেবে। দূর হয় অর্থকষ্ট। কিন্তু প্রতীক্ষার স্বপ্ন ছিল আরও বড়। তাই আরও পড়াশুনার জন্য ১৯৯৫ সালে মুম্বাইয়ের ভিখরোলি কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক হন প্রতীক্ষা।
এরপর হঠাৎ প্রতীক্ষার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসেন ব্যাংককর্মী প্রমোদ তেন্ডুলকার। ১৯৯৩ সালে তাকে বিয়ে করেন প্রতীক্ষা। প্রমোদের উৎসাহে আরও সামনে এগোনোর স্বপ্ন দেখেন প্রতীক্ষা। এরপর নানা ধাপ পেরিয়ে ২০২০ সালের জুন মাসে মুম্বাইয়ে স্টেট ব্যাংকের একটি ব্রাঞ্চে এজিএম হিসেবে যোগ দেন তিনি। দুই বছর হয়ে গেলো তিনি এজিএম হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।