খাদ্যশস্যের ২০০ জাহাজ আটকে রেখেছে রাশিয়া
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ মার্চ,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:০১ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
খাদ্যশস্য বোঝাই প্রায় দুই শ’ জাহাজ কৃষ্ণসাগরে আটকে রেখেছে রাশিয়া। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই কৃষ্ণসাগরে খাদ্যশস্য বোঝাই সব জাহাজের চলাচল বন্ধ করে দেয় মস্কো।
বুধবার পানামার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাশিয়ার নিষেধ অমান্য করে দেশটির পতাকাবাহী দুইটি জাহাজ চলার চেষ্টা করলে গুলি করে তাদের থামিয়ে দিয়েছে রুশ নৌবাহিনী। তবে কবে এই ঘটনা ঘটেছে তা জানানো হয়নি।
রাশিয়া অবশ্য এই অভিযোগের তীর ইউক্রেনের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। মস্কো জানিয়েছে, ইউক্রেনের নৌবাহিনী সমুদ্রে মাইন বিছিয়ে রেখেছে। জাহাজ চলাচল করলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সে কারণেই তারা জাহাজগুলিকে আটকে রেখেছে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশই ইউরোপ এবং আফ্রিকায় প্রচুর পরিমাণে গম রফতানি করে। পরিসংখ্যান বলছে, বছরে রাশিয়া প্রায় ৩০ মিলিয়ন টন গম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করে। ইউক্রেন করে ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন টন।
জার্মানির সবচেয়ে বড় কৃষিপণ্যের ব্যবসায়ী সংস্থা বেওয়া জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনের বন্দর থেকে এক বিন্দু খাদ্যশস্যও রফতানি করা যায়নি। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে ইউরোপ জুড়ে খাদ্যসংকট শুরু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই খাবারের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
ইউরোপের একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রাশিয়া দানাশস্য এবং সার রফতানি করে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করায়, রাশিয়া এবার তা রফতানি নাও করতে পারে। সেক্ষেত্রে খাদ্যসংকট আরো তীব্র হবে। লড়াই শুরু হওয়ার পরেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চাষিদের বলেছিলেন, যেখানে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত, সেখানে যেন চাষিরা ভুট্টার চাষ শুরু করেন। এটাই ভুট্টা চাষের সময়। কিন্তু যেভাবে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে, তাতে চাষিরা ভুট্টার বপন বিশেষ করে উঠতে পেরেছেন বলে মনে করা হচ্ছে না।
ইউরোপের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকাতেও খাবারের দাম বাড়তে শুরু করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। বহু দেশই ইউরোপের রফতানির উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া রাশিয়া জাহাজ আটকে রাখায় দানাশস্য যাতায়াতের চেনটি ভেঙে গেছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কৃষ্ণসাগরের ওই রুটটিকে বিশ্বের রুটির ঝুঁড়ি বলা হয়।