avertisements 2

রুশ সেনাদের রুখতে তৈরি হচ্ছে কিয়েভ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ মার্চ,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫৫ এএম, ১১ মে,শনিবার,২০২৪

Text

রাশিয়ার আক্রমণ শুরু দিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রথমবার বিমান হামলার সতর্কতাসংকেত বেজে ওঠে। অনেকেই মনে করছিলেন সেদিন বিকেলের মধ্যেই সম্ভবত শহরটির পতন হবে।

খবর পাওয়া যাচ্ছিল, ইউক্রেনের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে সামরিক বহর ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রুশ সেনারা এগিয়ে আসছেন। সামরিক বিশ্লেষকরা রুশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে বেশ উচ্চ ধারণাই প্রকাশ করে আসছিলেন।

তাঁরা বলেছিলেন, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে দক্ষ হওয়ার অমূল্য অভিজ্ঞতা এবং সিরিয়া যুদ্ধে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে রুশ সেনাদের পেশাদারি বেড়েছে। চেচনিয়ার বিদ্রোহীদের দমন করতে গিয়ে ১৯৯৫ সালে রুশ বাহিনীর সমরকৌশলের ত্রুটিগুলোও এখন পুরনো গল্প।

যুদ্ধের দুই সপ্তাহ পর প্রমাণিত হলো—এসব অনুমানের অনেকই ভুল। রুশরা তালগোল পাকিয়েছে এবং ইউক্রেনীয়রা প্রতিরোধ করেছে। কিয়েভের চারপাশে রুশ সেনাদের অগ্রযাত্রা স্থবির হয়ে রয়েছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতিটা ভিন্ন। সেখানে রুশ বাহিনী ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থীদের নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের মধ্যে স্থল সংযোগ প্রতিষ্ঠায় দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

একটি বিষয় যুদ্ধের শুরু থেকেই পরিষ্কার, কিয়েভের ওপর নিয়ন্ত্রণ যুদ্ধক্ষেত্রে জয়ী হওয়া ও রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিষ্ঠা দুটির জন্যই জরুরি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি যতক্ষণ কিয়েভে নিয়ন্ত্রণ অটুট রাখতে সক্ষম হবেন ততক্ষণ তিনি পরাজয় না মেনে থাকতে পারবেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও নিজেকে জয়ী ঘোষণা করতে পারবেন না।

উপগ্রহের তোলা ছবিতে দেখা গেছে, ৪০ মাইল দীর্ঘ রুশ সেনাবহর কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ার পর আবারও সংগঠিত হচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সর্বশেষ বক্তব্য হলো, সেনাবহরের পেছনের অংশগুলো এগিয়ে এসে সামনের অংশের সঙ্গে মিলছে। তবে কিয়েভের নিকটবর্তী অংশগুলো তেমন নড়াচড়া করছে না।

কিয়েভের আশপাশের যুদ্ধ উত্তর-পশ্চিমে কেন্দ্রীভূত। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিন সকাল থেকেই লড়াই চলছে। সেদিনই রুশ ছত্রীসেনারা হোস্টোমেল ও ইরপিন নামের দুটি উপশহরের অদূরে কার্গো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দাদের কথায়, ছোট শহর দুটি ব্যাপক ধ্বংসের শিকার। এখন কিয়েভে জোরেশোরে ধাক্কা দেওয়ার আগে রুশ বাহিনী একটি মুক্তাঞ্চল তৈরি করতে চাইছে। তবে ইউক্রেনীয়রা তাদের রুখে দিয়েছে।

গত কয়েক দিন ধরে ইউক্রেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ইরপিন ও হোস্টোমেলের বিমানবন্দরের আশপাশে লড়াই চালিয়ে যেতে দেখা গেছে। ঘন বনভূমির আড়ালে থাকা ইউক্রেনীয়দের বসানো কামান রুশদের দিকে গোলা নিক্ষেপ করে যাচ্ছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ পর্যন্ত যুদ্ধে ১,৩০০ ইউক্রেনীয় সেনা মারা গেছে। এ ছাড়া শুক্রবার ৫০০ থেকে ৬০০ রুশ সেনা ইউক্রেনের বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

প্রবল যুদ্ধ চলতে থাকা উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত থেকে কিয়েভের কেন্দ্রস্থল গাড়িতে মাত্র ২০ মিনিটের দূরত্ব। তবে শহরের কেন্দ্রে যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি নেই বললেই চলে। দেখা গেছে, কিয়েভের ভেতরে ইউক্রেনীয়রা আত্মরক্ষার ভৌত কৌশলগুলো জোরদার করছে। চেকপয়েন্টগুলোতে আগে অল্পকিছু কংক্রিটের ব্লক ছিল। সেখানে এখন পুরোমাত্রায় শক্তপোক্ত ব্যারিকেড। কিয়েভজুড়ে সমানে বালুর বস্তা সাজানো হচ্ছে। কিয়েভের কামাররাও এখন ট্যাংক ঠেকানোর ধাতব কাটাজাতীয় প্রতিবন্ধক তৈরিতে মহা ব্যস্ত।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2