ভূ-রাজনীতির জালে ফিলিস্তিন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৮ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৩৩ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেও ভূ-রাজনীতির কারণে কখনোই স্বীকৃতি পায়নি ভূখণ্ডটি। এমনকি ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ওআইসি প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন সংস্থাটির কিছু সদস্য সরাসরি তাদের বিরোধিতা করছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ফিলিস্তিন ইস্যুতে একটি রেজুলেশন ২৪-৯ ভোটে গৃহীত হয়। এতে ১৪ জন সদস্য ভোট দানে বিরত থাকে।
ওই রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশসহ ওআইসির ১৫টি সদস্য দেশ, কিন্তু ওই সংস্থার সদস্য ক্যামেরুন বিপক্ষে ভোট দিয়েছে এবং টোগো ভোট দানে বিরত ছিল। ভারত এর আগে সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিলেও এবারে ভোট দানে বিরত ছিল এবং একইসঙ্গে নেপালও ভোট দেয়নি। আশ্চার্যের ব্যাপার হলো, পশ্চিমা দেশগুলো, যারা সবসময় মানবাধিকারের কথা বলে, তারা ফিলিস্তিনের বিরোধিতা করেছে। আবার যাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো সমালোচনা করে অর্থাৎ চীন ও রাশিয়া, তারা পক্ষে ভোট দিয়েছে।
এই রেজুলেশনের ভিত্তিতে প্যালেস্টাইনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে একটি তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘ একটি কমিশন গঠন করবে এবং তারা একটি রিপোর্ট প্রদান করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একজন কূটনীতিক বলেন, ‘মানবাধিকার কাউন্সিল একটি রাজনৈতিক সংস্থা, যেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতির থেকে ভূ-রাজনীতি ও জাতীয় স্বার্থ অধিক গুরুত্ব পায়।’
ওআইসি ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ফিলিস্তিন ইস্যুতে মতদ্বৈততা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে ভারত ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিতো, কিন্তু তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে।’
ইউরোপের মধ্যে মতদ্বৈততার বিষয়ে এই কূটনীতিক বলেন, ‘বৃহৎ দেশ ফ্রান্স ভোট দানে বিরত ছিল, কিন্তু জার্মানি ও যুক্তরাজ্য বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এদের মধ্যে ফ্রান্স একটি ভারসাম্য নীতি বজায় রাখলেও অন্য দুটি দেশের জাতীয় স্বার্থ ইসরায়েলের প্রতি অনেক বেশি।’
ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব কখনোই মূল কারণ হিসেবে দেখা হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবারে সমস্যা শুরু হয়েছে আল আকসা মসজিদে রোজার সময়ে নামাজ না পড়তে দেওয়াকে কেন্দ্র করে। পরে সমস্যা ঘনীভূত হলে হামাস রকেট ছোড়া শুরু করে। তখন পশ্চিমা দেশগুলো বলা শুরু করে ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার আছে। কিন্তু কেউ এটা বলে না নামাজ পড়তে বাধা দেওয়াটাও ইসরায়েলের ভুল ছিল।’
এদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ফিলিস্তিনের পক্ষে মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন এবং সংস্থাটির প্রতি ফিলিস্তিনে যে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে সেটির দায়বদ্ধতা ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উৎসঃ banglatribune