প্যারিসের একমাত্র মুসলিম স্কুল বন্ধ করল ফ্রান্স
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:৩১ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ০৭:২৪ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের একমাত্র মুসলিম স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যেই ফ্রান্সের সবচেয়ে বেশি মুসলিমের বাস। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুসলিমদের ওপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।
২০১৫ সালে প্যারিসে মিয়ো হাই স্কুল ও কলেজ (এমনএইচএস) প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অফিসিয়ালভাবে প্রতিষ্ঠানটি ধর্মনিরপেক্ষ ও জাতীয় পাঠ্যক্রম অনুসরণ করলেও এখানে অধিকাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন জানান, ‘আমাদের স্কুলটি সব ধর্ম-বিশ্বাস ও সংস্কৃতির লোকদের জন্য উম্মুক্ত।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাছাড়া আমরা এখানে ধর্ম বিষয়ক কোনো পাঠদান করি না।’ তিনি আরো বলেন, অবশ্য স্কুলের অন্যতম বৈশিষ্ট হলো, এখানের মেয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ধর্মীয় পোশাক পরতে পারে। ইচ্ছা হলে তারা হিজাবও পরতে পারবে। কারণ আমরা মনে করি, সবাইকে নিজেদের পছন্দের পোশাক পরিধানের সুযোগ দেওয়া উচিত।’
২০০৪ সালে স্কুল প্রাঙ্গণে মুসলিম মেয়ে শিক্ষার্থীদের মাথা ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একটি আইন পাশ করে ফরাসি সরকার। স্কুলে প্রবেশকালে সবাই মাথা খুলে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়। তখন থেকে এমন প্রতিষ্ঠান খুবই কম ছিল যেখানে একজন মুসলিম নারী শিক্ষার্থী নিজ ধর্ম পালন করে শিক্ষাগ্রহণ অব্যাহত রাখতে পারে। আর প্যারিসের স্কুলটি ছিল অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে সবাই নিজের ধর্ম পালন করতে পারে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, স্কুল বন্ধ বিষয়ক শেষ নির্দেশনাকে ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ বলে আখ্যায়িত করে। স্কুল বন্ধ হলে প্রতিষ্ঠানের ১১০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষাবর্ষের মাঝে অন্য কোথাও যেতে পারবে না। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের ১৮জন শিক্ষক ও কর্মচারিরাও কর্মহীন হয়ে পড়বে।
গত ১৭ নভেম্বর স্কুল পরিদর্শনে একদল পুলিশ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা আসেন। তদন্তের পর স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তকে আইনি বৈধতা দিতে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তায় ত্রুটির অভিযোগে বন্ধের নির্দেশ দেয়। আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ রাখতে অনেক ধরনের সংস্কার করা হয়েছে। ফ্রান্সে প্রায় সাড়ে প্রায় ৪৫ লাখ মুসলিম বসবাস করে। ফ্রান্সের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে দেশটির সরকার।