avertisements 2

ভারত, নাকি ইন্ডিয়া? নাম বদল নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক তুঙ্গে

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ সেপ্টেম্বর, বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০২:১৯ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার দেশটির ‘ইন্ডিয়া’ নাম পরিবর্তন করে ‘ভারত’ করতে চলেছে বলে ইতিপূর্বেই গুঞ্জন চলছিল। এই আবহে এবার জি ২০ সম্মেলন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে যে নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে তাতে ইংরেজিতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা হয়েছে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।

বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, কেন্দ্রের সরকার সংবিধান অমান্য করে দেশের নামও পরিবর্তন করে দিচ্ছে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতেই বিরোধী দলগুলো এক ছাতার নিছে এসেছে। বিজেপি বিরোধী জোটের নাম ইন্ডিয়া। জোটের এই নামকরণের পর কম হয়নি রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এ নিয়ে সরব হতে দেখা গেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া জোট মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চলেছে বলে বিশ্বাস বিরোধীদের। বিরোধীদের পাল্টা চাপে রাখতে তড়িঘড়ি ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ভারত নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিন্দুবাদীরা। সেই ইঙ্গিত মিলল রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে জারি করা জি ২০ সম্মেলনে নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণপত্রে। এই আমন্ত্রণপত্র ঘিরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে ভারতীয় রাজনীতিতে।

এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। এক্স-বার্তায় তিনি লিখেছেন, এনডিএ সরকারের পদক্ষেপ নিন্দাজনক। তিনি লেখেন, খবর আসলেই সত্য। ৯ সেপ্টেম্বর আয়োজিত জি ২০ সম্মেলনের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন। তাতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা হয়েছে।

দেশের নাম হিসেবে শুধু ‘ভারত’ ব্যবহারের পক্ষে বিজেপি। তাদের দাবি, ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি বিদেশী। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটলেও রয়ে গেছে এই নাম। এবার দেশের নামের মধ্যেও নিজস্বতা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের ছোঁয়া ধরে রাখতে বিজেপি সাংসদ হরনাথ সিং যাদব দেশের নাম পাকাপাকি ভাবে ‘ভারত’ করার প্রস্তাব দেন। পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডাকার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের সংবিধান থেকে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি বাদ দেওয়ার দাবি আরও জোরদার হয়েছে।

কয়েক দিন আগে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতও এই সুরে কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, দেশে সব সরকারি কাজে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটির ব্যবহার বন্ধ হওয়া দরকার। তার বদলে ব্যবহার করা উচিত ‘ভারত’। তাঁকে সমর্থন জানিয়ে বিজেপির রাজ্যসভার সদস্য হরনাথ সিং যাদব বলেছিলেন, ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাদ দেওয়ার জন্য সংবিধান সংশোধন করা দরকার। ইন্ডিয়া শব্দটি ব্রিটিশদের আমদানি করা। ওটা এক ধরনের গালি। ‘ভারত’ শব্দের মধ্যে রয়েছে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিচ্ছুরণ।

ক্ষমতাসীন হয়ে রাজ্যে রাজ্যে ও কেন্দ্রে বিজেপি বহু নাম বদল করেছে। বিশেষ করে মোগল আমলের পরিচয় বহনকারী শহর, নগর, জেলা ও রাস্তার নাম বদলের মধ্য দিয়ে তারা হিন্দুত্বের বিকাশ ঘটাতে চেয়েছে। এলাহাবাদ হয়েছে প্রয়াগরাজ, মোগলসরাই স্টেশনের নামকরণ হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নামে। রাষ্ট্রপতি ভবনের মোগল উদ্যানের নাম বদলে হয়েছে অমৃত উদ্যান। মুসলমান–ছোঁয়া ছাড়াও যে নাম বদল হয়নি তা নয়। রাজপথের নাম বদলে মোদি কর্তব্যপথ রেখেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই প্রস্তাব সংক্রান্ত বিল আনার দাবি জানাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। তবে শোনা যাচ্ছে, সরকার বিশেষ সংসদ অধিবেশন চলাকালীন সংবিধান থেকে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটা অপসারণের বিল পেশ করতে পারে। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি জানিয়েছেন, অমৃতকালে সংসদে ফলপ্রসূ আলোচনা ও বিতর্ক চায় সরকার। পাঁচ দিনের এই বিশেষ অধিবেশনে, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’, ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’, ‘মহিলা সংরক্ষণ’ সংক্রান্ত বিল পেশ করা হতে পারে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2