avertisements 2

বিদেশ গিয়ে বাংলাদেশিদের কেন খুঁজতেন, তা জানালেন মমতা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:১৯ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪

Text

সেই ১৯৯৭-৯৮ সালের কথা। সেই সময় জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু বিদেশের মাটিতে পা রেখেই সবার প্রথমে তার মনে আসতো বাংলাদেশের কথা। ওই সময় বাংলাদেশিদের খোঁজ করেছিলেন মমতা। কারণ একটাই, মন খুলে মনের কথা ব্যক্ত করা। কারণ তারই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) কলকাতার একটি অনুষ্ঠান থেকে কয়েক দশক আগের সেই পুরনো ঘটনার স্মৃতিচারণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান।

মমতা বলেন, আমাদের বাংলা চর্চার সু-ভাষাটা যেন হারিয়ে না যায়। কোনো ব্যক্তি সব ভাষাতে কথা বলতে পারলেও তার মাতৃভাষায় কথা বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। তেমনি আমিও বিদেশে গেলেই প্রথমে খুঁজি বাংলাদেশের কারা আছে। কেন দেখি? কারণ আমি যখন জাতিসংঘের অধিবেশনে আমেরিকায় গিয়েছিলাম, সেটা ১৯৯৭- ৯৮ সালের কথা। তখন যুক্তরাষ্ট্রে বেশি হোটেল ছিল না। তখন দেখেছিলাম নিজেদেরকেই নিজদের রান্না করে খেতে হতো। তো কখন আমি মিটিং করব, আর কখন রান্না করে খাব। তখন খুঁজতে খুঁজতে বের করলাম বাংলাদেশের কয়েক জনকে। বাংলাদেশ এমনিতেই অতিথি পরায়ণ হয়। তারা আমাকে বললেন, ও দিদি কি খাইতাছেন? আমি বললাম কি খামু, কিছুই তো নাই! তখন ওরা বলল, আমরা আপনাকে খাবার পাঠামু। এই বলে একটা ক্যানে করে এত খাবার পাঠালেন যে একদিনের খাবারে টানা সাত দিন হয়ে গেল।

ওই সময়েরই আরেকটি ঘটনার কথা স্মরণ করে মমতা বলেন, এমনিতে আমি একটু গেঁয়ো, ঘরোয়া টাইপের লোক। আমেরিকায় গিয়ে গোসলের সময় বালতি বা মগ কোনোটাই পাইনি। শেষ পর্যন্ত কিচেন থেকে একটা সসপ্যান নিয়ে এসে আমি গোসল করেছি। কিন্তু কাউকে বুঝতে দেইনি যে আমি জানি না। আমি বিদেশের ফ্লাইটে প্রথম চড়েছিলাম। শুধু খেয়াল রাখতাম পাশের লোকটি কি করছে। এভাবে শিখতে শিখতে আমি আজ এই জায়গাটায় এসেছি।

এদিন দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরে ধনধান্য অডিটোরিয়ামের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেই সেই সব পুরনো ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন মমতা। এদিনের অনুষ্ঠানে থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন তিনি।

কেন্দ্রের কাছ থেকে বকেয়া পাওনা অর্থ না পাওয়া প্রসঙ্গে মমতা বলেন, আমাদের অনেক অর্থ আটকে রাখা হয়েছে এবং শুনেছি ২০২৪ সাল পর্যন্ত সেই অর্থ নাকি দেবে না। কিন্তু না দিক। দরকার হলে ভিক্ষা করব। শাড়ির আঁচল নিয়ে মায়ের কাছে যাব। কিন্তু দিল্লির কাছে ভিক্ষা চাইতে যাব না। আপনাদের সবার সহযোগিতা, আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছায় যেমন করেই হোক চালিয়ে নেব।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে ইতিহাস বিকৃত করারও অভিযোগ এনেছেন মমতা। তিনি বলেন, আমরা কারো চাকরি খাব না। হঠাৎ করে তাজমহল উঠিয়ে দেব না আবার হঠাৎ করে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালও উঠিয়ে দেব না। ইতিহাস ইতিহাসই। ইতিহাসকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা আমাদের কারোর নেই। ভারতের ইতিহাসই এ দেশের সম্পদ।

মমতা ব্যানার্জির দাবি, বাংলায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু নিজেদের মধ্যে এত ঝগড়া, সমালোচনা করি যে ভালো জিনিসটা মানুষের কাছে আসতে পারে না। খারাপটা নিয়েই আমরা বেশি মাতামাতি করি। আমার নিজের বলে কিছু নেই। আমার নিজস্বতা একটাই। মানুষ যেন কোনোদিন আমাকে ভুল না বোঝে বলে অনুরোধ রাখেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2