avertisements 2

সন্তানকে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে প্রশিক্ষণে পাঠানো মায়ের আহাজারি!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ নভেম্বর, বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৫১ এএম, ১৫ জানুয়ারী, বুধবার,২০২৫

Text

 রিয়াসাদ রাইয়ানের মা আম্বিয়া সুলতানা এমিলি

জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছেলে আবু বক্কর রিয়াসাদ রাইয়ান (১৫) আট মাস ঘরের বাইরে। দীর্ঘ সময় ধরে সন্তানের দেখা না পেয়ে হতবিহবল মা আম্বিয়া সুলতানা এমিলি।

বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে রিয়াসাদ রাইয়ানের মা জানান, চরম ভুল একটি পথকে সঠিক মনে করে তিনি এবং তার সন্তান এগোচ্ছিলো। এ কারণেই হয়তো সন্তান তার বুক খালি করে বান্দরবানের পাহাড়ে অর্ধমৃত অবস্থায় পরে আছে। তিনি জানেন না সে জীবিত না মৃত। এই সিদ্ধান্তকে একজন মা হিসাবে চরম ব্যর্থতা বলে মনে করেন তিনি।


ছেলের শিক্ষকের মাধ্যমে তিনি নিজেও জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন। বলেন, তাকে এবং তার সন্তানকে ডি-মোটিভেটেড করা হয়েছে, ভুল পথ দেখানো হয়েছে। জঙ্গিদের নাম, সংগঠনের নাম সবকিছুই তার কাছে গোপন করা হয়েছিলো। তার নিকট সবকিছু কোরআন-হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে ভুল ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তার নবম শ্রেণী পড়ুয়া সন্তান ছিল অত্যন্ত মেধাবী, বিনয়ী এবং ভদ্র। জঙ্গিরা তার সন্তানের মতো বিনয়ী এবং মেধাবীদেরকেই বাছাই করে বাধ্য করছেন এই কাজগুলো করার জন্য। র‍্যাব তার সাথে যোগাযোগ করে সবকিছু বুঝিয়ে বলায় তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন। সেই সঙ্গে জেনেছেন জঙ্গিরা দেশের জন্য কতোটা ভয়ঙ্কর। 


এমিলি জানান, ছেলের শিক্ষক আল-আমিন তাদের কাছে অনেক বিশ্বস্ত ছিল। তিনিই (আল-আমিন) তাদের মা-ছেলেকে কোরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ডি-মোটিভেটেড করে। শুরুতে বাঁধা দিলেও সন্তানের জেদ এবং আল-আমিনের কথার কাছে হেরে যান তিনি। তার স্বামীর অবস্থা এখন আশংকাজনক। তিনি তার সন্তানকে ফেরত চেয়েছে এবং আত্মসমর্পণ করে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি দেশের সকল অভিভাবকদের সচেতন হতে বলেছেন।

বিভিন্ন সময়ে নিরুদ্দেশ তরুণদের বিষয়ে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা নজরদারি করতে গিয়ে তথ্য পায় যে, নারায়ণগঞ্জ থেকে আবু বক্কর ওরফে রিয়াসাদ রাইয়ান নামে এক তরুণ গত মার্চ মাসে নিরুদ্দেশ হয়। তার পরিবার সংশ্লিষ্ট থানায় একটি জিডি করে। এর আগে প্রকাশিত নিরুদ্দেশ ৫৫ জনের তালিকায় আবু বক্করের নাম রয়েছে।

গত ৩ নভেম্বরের অভিযানে র‌্যাব ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক সংগঠনের মহিলা শাখা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় এবং জানতে পারে যে, একজন মা উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এবং তার সন্তানকে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে তথাকথিত হিজরতের নামে পাঠিয়েছেন।

র‌্যাব তথ্য বিশ্লেষণ ও নজরদারির মাধ্যমে নিজ সন্তানকে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে তথাকথিত হিজরতের নামে পাঠানোর সঙ্গে জড়িত আম্বিয়া সুলতানা ওরফে এমিলিকে গত ৫ নভেম্বর উদ্ধার করে। এরপর তাকে পরিবারের কাছে রেখে গত ৪ দিন ধরে ডি-রেডিকালাইজেশনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2