স্ত্রী-সন্তানসহ বেনজীর আহমেদকে দুদকে তলব
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ মে,
বুধবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:৩৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ছবি : সংগৃহীত
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে তার স্ত্রী ও সন্তানদেরও তলব করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত হয়েছে শুনেছি। তারিখ জানি না।’
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এটা তো আদালতের বিষয় নয়। এটা অনুসন্ধান কর্মকর্তারা জানেন। এটা গোপনীয় বিষয়।’
দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৮ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো নোটিশে বেনজীর আহমেদকে আগামী ৬ জুন এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের ৯ জুন হাজির হয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
মানিলন্ডারিং অনুবিভাগ এ অনুসন্ধানটি পরিচালনা করছে। দুদকের ক্লিন ইমেজের তিন কর্মকর্তাকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা হলেন দুদকের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী ও মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।
গত ২৭ মে বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা রাজধানীর গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটসহ ১১৯টি স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের (ক্রোক) আদেশ দেন আদালত। আদেশ দিয়েছেন তাদের নামে বিভিন্ন কোম্পানিতে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করারও। ঢাকা মহানগর আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বণিক বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুদক কর্তৃক অনুসন্ধান টিম গঠিত হয়েছে। সে টিম বেনজীরের জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে। সেই তথ্য অনুসারে, ৮৩টি দলিলের ক্রয়কৃত সম্পত্তি ক্রোক করা হয় ২৩ মে। সেই সঙ্গে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও তার সিকিউরিটিজের টাকা অবরুদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে আরো সম্পদের তথ্য আদালতে এসেছে। বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রীর ও মেয়েদের নামে থাকা আরো ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রাজধানীর গুলশানে চারটি ফ্ল্যাটবাড়ি ও সাভারে একটি জমি রয়েছে। বাকি ১১৪টি সম্পত্তি রয়েছে মাদারীপুর জেলায়।’
মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকে ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, বেনজীর আহমেদ ও তার মেয়ের নামে থাকা তিনটি বিও অ্যাকাউন্ট ও চারটি কোম্পানির (যার সব শেয়ারের মালিক তারা) শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ১৫টা কোম্পানিতে তাদের আংশিক মালিকানা বা শেয়ার আছে; সেসব প্রতিষ্ঠানে তাদের সম্পদের অংশ অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া স্থাবর সম্পদগুলো ক্রোক করা হয়েছে। আরো সম্পদ পাওয়া গেলে সেগুলো আমরা ক্রোক করব।’
তার আগে ২৩ মে তার সব স্থাবর সম্পদ ক্রোক বা জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজের আদেশ দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দুদকের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বেনজীর আহমেদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের জন্য আবেদন করে দুদক। এ আবেদনে সন্তুষ্ট হয়ে আদালত তার সম্পত্তি জব্দ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের নির্দেশ দিয়েছেন। জব্দকালীন কোনো সম্পত্তি ট্রান্সফার করা যাবে না। সেই সঙ্গে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো টাকাও উত্তোলন করা যাবে না।’
গত ২২ এপ্রিল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনের ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভায় অনুসন্ধানের অনুমোদন দেয়া হয়।