অস্ট্রেলিয়ায় রোগীদের যৌন নিপীড়নের দায়ে বাংলাদেশী ডাক্তারের কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩০ এপ্রিল,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০২:৩৫ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ডাক্তারি পরীক্ষার নামে যৌন উদ্দেশ্য নিয়ে নারী রোগীদের দেহের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করা এবং রোগীদের যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ায় শফিউল মিল্কি এক বাংলাদেশী ডাক্তারের ১১ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত ।
মেলবোর্নের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর জেলংয়ের বাসিন্দা শফিউল মিল্কি (৫৯) বেলারিন পেনিনসুলা মেডিকেল প্র্যাকটিসে কাজ করতেন। তার বিরুদ্ধে জেলংয়ের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৫ দফা অভিযোগ আনা হয়েছিল বলে এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
চিকিৎসার নামে যৌন উদ্দেশ্য নিয়ে ওই চিকিৎসক নারী রোগীদের স্তন এবং উরুতে স্পর্শ করতেন। শুধু তাই নয়, তিনি তাদের কৌশলে ধর্ষণ করতেন।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিনি এই অপরাধগুলো করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আদালতের নথি থেকে জানা যায় যে, ২০১২ সালে এক নারী রোগীর স্তনে হাত দেন শফিউল মিল্কি। এই কাজ তিনি রোগীকে অজ্ঞান করার পর করেন।
শুধু তাই নয়, ওই রোগী অভিযোগ করেন, ‘তার অন্তর্বাসকে টেনে’ খুলেছিলেন চিকিৎসক। ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালে তিনি একই কাজ করেছেন অন্য রোগীদের সঙ্গে।
২০১৯ সালে চিকিৎসক হিসেবে মিল্কির নিবন্ধন স্থগিত করেছিল মেডিকেল বোর্ড অব অস্ট্রেলিয়া। তবে দুই মাস পরে ভিক্টোরিয়ান সিভিল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (ভিসিএটি) শর্তসাপেক্ষে তাকে আবার চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত থাকার অনুমতি দেয়।
এই মাসের শুরুতে, মিল্কি একটি কাউন্টি আদালতের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল, তবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন।
কাউন্টি কোর্টের বিচারক ফেলিসিটি হ্যাম্পেল মিল্কির আচরণকে "শিকারী" এবং "গুরুতর যৌন অপরাধমূলক" বলে বর্ণনা করেছেন।"আপনি একজন ডাক্তার হিসাবে আপনার কর্তৃত্বের অপ্যব্যবহার করেছেন, ডাক্তার-রোগী সম্পর্কের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা এবং আপনি যা করছেন তা ডাক্তারি- পরীক্ষার অংশ ছিলো না, তা ছিলো আপনার নিজের যৌন কামনা চরিতার্থ করার জন্য এই মহিলাদেরকে যৌন নির্যাতন করার জন্য," বিচারক আরো বলেন "এটি আস্থার একটি গুরুতর লঙ্ঘন।"
মিল্কি একটি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে কারাগার থেকে কার্যক্রম দেখেছে, মাঝে মাঝে তার মুখ ঢেকে এবং অপরাধের বিবরণ পড়ার সাথে সাথে তার মাথা ঝাঁকিয়েছে।
৫৯-বছর-বয়সী ডাঃ মিল্কির কারাদণ্ডের মধ্যে ১১ বছরের নন-প্যারোল সময়কাল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার অর্থ মুক্তি পাওয়ার সময় তার বয়স হবে ৭০।
মিল্কি বাংলাদেশের একটি মেডিকল কলেজ থেকে ডিগ্রি নিয়ে চিকিৎক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং ২০০৯ সালে নিউজিল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন, তিনি নিউজিল্যান্ডের নাগরিক। বিচারক হ্যাম্পেল বলেছেন যে সম্ভবত দুই সন্তানের পিতাকে তার সাজা শেষ করার পরে নিউজিল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হবে।