করমুক্ত আয়সীমা বেড়ে হতে পারে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ মে,
বুধবার,২০২৫ | আপডেট: ০৫:২৭ পিএম, ১৪ মে,
বুধবার,২০২৫

আসন্ন জাতীয় বাজেটে ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের ওপর করের চাপ কমাতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো এবং নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম শিথিল করা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব বিবেচনা করছে রাজস্ব বিভাগ। এই প্রস্তাব আগামী ১৫ মে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরপর ১৯ মে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এটি উপস্থাপন করা হবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের অংশ হিসেবে। অর্থ উপদেষ্টা আগামী ২ জুন বাজেট ঘোষণা করতে পারেন।
এবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ব্যক্তি পর্যায়ে কিছুটা স্বস্তি দিতে আমরা এসব উদ্যোগ বিবেচনা করছি, কারণ গত কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোগাচ্ছে জনগণকে। বাংলাদেশে গত ২৬ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে, যা প্রকৃত আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.১৭ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করেছিল।
চলমান জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট বিবেচনায় নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো বারবার এই সীমা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
চলতি বছরের মার্চে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) করমুক্ত সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর সুপারিশ করে। অন্যদিকে, এফবিসিসিআই এটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করার আহ্বান জানায়। অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনও বলছে, বর্তমান সীমা আর বাস্তব অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। করমুক্ত সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি, সঞ্চয়পত্র কিনতে আয়কর রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতাও শিথিল করার কথা ভাবছে সরকার। বর্তমানে কেউ ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে আগের বছরের কর রিটার্নের প্রমাণ দিতে হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী এই সীমা বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করা হতে পারে, যাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সুবিধা পান। বর্তমানে ৪৫টি সরকারি-বেসরকারি সেবার জন্য কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র প্রয়োজন। কর সচেতনতা বাড়াতে এনবিআর এই বাধ্যবাধকতা চালু করেছিল। তবে প্রস্তাবিত পরিবর্তনের আওতায়, নতুন ব্যবসা শুরুর সময় লাইসেন্স গ্রহণে কর রিটার্নের প্রমাণ শিথিল করা হতে পারে। তবে নবায়নের ক্ষেত্রে এটি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
অন্যদিকে, ব্যবসার জন্য কর অবকাশ ও হ্রাসকৃত করহার আগামী বাজেটে বাড়ানো হচ্ছে না এটি সরকার ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মধ্যে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের চলমান ঋণচুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ। রাজস্ব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর ছাড়ের সুবিধা ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করা হবে কিছু ছাড় সময়সীমা শেষে বাতিল হবে, আবার কিছু নির্দিষ্ট আদেশের মাধ্যমে সীমিত করা হবে।