ছোট গরুর বড় দাম
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ জুন,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৯:৫৩ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৫

রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটের মাঝখানে ক্রেতা-ব্যাপারীদের মধ্যে চলছে বাহাস। তিন মণ মাংস মিলবে এমন গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৯৬ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। আর চার মণ মাংস মিলবে এমন একটি দেশি মাঝারি গরুর দাম এক লাখ ৩০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। ফলে দেখা গেছে গত বছর থেকে এবার তিন মণ ওজনের গরুর দাম ২৪-৩০ হাজার টাকা বেশি। গরুর এই আকাশচুম্বী দামে ক্রেতারা পড়েছেন অস্বস্তিতে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। হাটে কোরবানির পশু আসা শুরু করলেও এখনো বড় গরু সেভাবে ওঠেনি। যে গরু আছে সেগুলোর দাম আবার বেশ চড়া। এছাড়া হাটে বলার মতো প্রকৃত ক্রেতার সমাগম হয়নি। যে কয়জন হাতেগোনা লোক এসেছেন তারা দরদামেই ব্যস্ত। তবে যাদের দামে মিলে যাচ্ছে তারা কিনে নিচ্ছেন পছন্দের পশু। এর বাইরে গাবতলীর হাটে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও টিকটকারদের ভিড় দেখা গেছে চোখে পড়ার মতো।
কামরাঙ্গীরচরের আসমা বেগম ছেলে-মেয়ে ও ছেলের বউকে নিয়ে এসেছেন গাবতলী হাটে। ১৬-১৮টি গরু দেখার পর ৯৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছেন তিনি। লাল রঙের গাভি কিনে মহাখুশি আসমা।
তিনি বলেন, গরুর দাম এবার অনেক বেশি। চার মণ ওজনের একটি গরুর দাম গত বছর থেকে ৩০-৩২ হাজার টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। আল্লাহর নামে কোরবানি দেওয়ার জন্য ৯৫ হাজার টাকায় গরু কিনলাম। বাড়ির সবাই গরুকে এই কয়দিন আদর-যত্ন করবে। আমার ইচ্ছা ছিল আরও বড় গরু কেনার। কিন্তু দাম বেশি।
ব্যাপারীরা বলছেন, মাংস ও গো-খাদ্যের দাম বাড়তি। ফলে হাট ও গৃহস্থের বাড়ি থেকে বাড়তি দামে গরু সংগ্রহ করে ঢাকায় আনা হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবহন খরচও বেশি। এসব কারণেই গরুর দাম বাড়তি। কুষ্টিয়ার মিরপুরের সিদ্দিক ব্যাপারী জাগো নিউজকে বলেন, ৯৫ হাজার টাকায় একটা গরু বিক্রি করলাম। এবার গরুর দাম বাড়তি। কারণ গরুর খাবার ও পরিবহন খরচ বেশি।
ব্যাপারীদের যুক্তি, মাংসের দামের ওপর নির্ভর করে কোরবানির পশুর দাম। গত বছর ৬০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে ২০০ টাকা বেড়ে ৮০০ টাকা হয়েছে সেই মাংসের দাম। ফলে প্রতি মণ মাংসের দাম বেড়েছে আট হাজার টাকা। এতে করে তিন মণ ওজনের গরুপ্রতি দাম বেড়েছে ২৪ হাজার টাকা।
মেহেরপুরের গাংনীর আব্দুল খালেক ব্যাপারী। তিনি প্রতিবারের মতো এবারও ৬০টি গরু নিয়ে গাবতলীর হাটে এসেছেন। গো-খাদ্য ও পরিবহন খরচের কারণে গরুর দাম বেশি বলে দাবি তার।
ছোট গরুর বড় দাম
আব্দুল খালেক বলেন, কসাইয়ের দরেও যদি হিসাব করেন তাহলে প্রতি মণ মাংসের দাম বেড়েছে আট হাজার টাকা। গত বছর ৬০০ টাকা কেজি দরের মাংসের দাম এখন ৮০০ টাকা। এই হিসাবে তিন মণ ওজনের গরু কোরবানি দিতে চাইলে ২৪-৩০ হাজার টাকা বাড়তি দিতে হবে। আমরা গ্রাম থেকে গরু কিনতে পারছি না। কম দামে গরু না পেলে কীভাবে ঢাকায় বিক্রি করবো?
এদিকে গাবতলীর মূল হাটের স্থান সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন যাদের বাড়িতে জায়গা আছে তারা কিনছেন গরু। তবে চূড়ান্তভাবে বেচাকেনা শুরু হবে মঙ্গল ও বুধবার।