avertisements 2

ছাতকে ৩ কোটি টাকার 'অপ্রয়োজনীয়' সেতু!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:৪৯ এএম, ২৬ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ১০:০২ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

সড়ক নেই অথচ প্রায় তিন কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। সেতুর এক পাশে সড়কের সংযোগ থাকলেও অন্য পাশে ফসলি জমি। তবু খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এ সেতু। সেতুর এক প্রান্তে কোনো সড়ক না থাকায় বর্তমানে সেতুটি কোনো কাজে আসছে না।

ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের আনুজানি গ্রামের পাশের চেলাখালের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এই সেতুর অবস্থান।

জানা যায়, খালের দক্ষিণে আনুজানি গ্রাম, উত্তরে ফসলি জমি ও চেরা বিল। বিলের পাড়ে মইনপুর ও কুরশি গ্রাম। চেলা খালের ওপর এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় তিন বছর আগে। গ্রামের পাশের সড়ক যুক্ত করে সেতুটি খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৬ মিটার, প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। কিন্তু সেতুর অপর প্রান্তে কোনো সড়ক নেই। সংযোগ সড়কের পরই জমি। আলপথ ছাড়া সড়কের কোনো অস্তিত্ব নেই সেখানে।

এদিকে সেতুটি তুলনামূলক নিচু হওয়ায় ভরা বর্ষায় নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।

আনুজানি গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মইনপুর ও কুরশি ছাড়াও খালের উত্তর পাড়ের আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এই সেতু নির্মাণে করা হয়েছে। সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আনুজানি গ্রামের বাসিন্দা বিচারপতি মো. ইমান আলী, এলজিইডি ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সেতু সম্পর্কে আনুজানি গ্রামের আব্দুর রহিম জানান, ব্রিজ তো অইয়া গেছে। ওখন রাস্তা অয়র না। রাস্তা নাইতে ব্রিজ কোন কাম লাগব নি।

মকিবুল ইসলাম বলেন, পাশে একটি গ্রাম আছে। বর্ষাকালে যদি সেই গ্রামে যাওয়া আসা যায় না তাহলে ব্রিজের কোন মূল্য নাই। রাস্তা নির্মাণ করলে ব্রিজটি মানুষের কাজে আসবে। মইনপুর ও কুরশি গ্রামের মানুষও ওই দিকে যাতায়াত করা যাবে। আমাদের দাবি দ্রুত রাস্তা করা হোক।

আনুজানি ও আশপাশের গ্রামের কয়েকজন লোক জানিয়েছেন, সেতুটির এখন এখানে প্রয়োজন ছিল না। বরং এ সেতু থেকে আধা কিলোমিটার দূরে আলীগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে চেলা খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। সেখানে সেতু হলে মঈনপুর ও কুরশি গ্রামের মানুষও ওই দিকে যাতায়াত করতে পারত। এখন তৈরি করা নতুন সেতুর সঙ্গে ওই দুই গ্রামের সংযোগ দিতে হলে এক দিকে তিন কিলোমিটার, অন্যদিকে চার কিলোমিটার সড়ক করতে হবে।

ভাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আবদুন নূর বলেন, সেতুর উত্তর পাড় থেকে দুটি গ্রামে যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মাণ করতে হবে। সড়ক না হলে সেতু কোনো কাজে আসবে না।

এলজিইডির ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবুল মনসুর মিয়া বলেন, অনেক স্থানে এ রকম হয়। দেখা গেছে, আগে সেতু হওয়ায় পরে সড়কের কাজ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত করা হয়েছে। সেতুটির উত্তর পাশে সড়ক করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করছেন তাঁরা।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2