avertisements 2

বাংলাদেশ-ভারত টানাপোড়েন

ত্রিপুরায় বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা, নিন্দা প্রতিবাদের ঝড়

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:২৯ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় গতকাল সোমবার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে নজিরবিহীন হামলা হয়েছে। ‘হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি’র ব্যানারে কয়েকশ ব্যক্তি ঢুকে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। হাইকমিশনের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল সীমান্তের বিভিন্ন স্থলবন্দর এলাকায় বিশৃঙ্খলা করেছে ভারতীয় বিক্ষোভকারীরা। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করেছে, পুড়িয়েছে বাংলাদেশি পণ্য।

সহকারী হাইকমিশনে হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। রাতেই বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এ হামলাকে দুঃখজনক আখ্যা দিলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেনি ভারত। 

সহকারী হাইকমিশন বাংলাদেশের সার্বভৌম সম্পদ; ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী ভারত নিরাপত্তা দিতে বাধ্য। দক্ষিণ এশিয়ায় পাঁচ দশকের মধ্যে কোনো দেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলার ঘটনা এটিই প্রথম। ভারতে হামলা হলেও বাংলাদেশে ভারতীয় কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। খুলনায় বিক্ষোভের খবর পেয়েই ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী।

এদিকে গতকাল পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েনের দাবি জানান। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিএনপি মহাসচিবসহ রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাঁর এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করে খণ্ডন করেছেন। সরকার, বিএনপি-জামায়াতসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল, অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব হামলার প্রতিবাদ জানালেও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। মমতার বক্তব্যকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

গতকাল শুধু আগরতলায় হামলা নয়, মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করে দেশটির বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারের প্রতিবাদে একই দিন চট্টগ্রামে ভারতের উপহাইকমিশনে স্মারকলিপি দিলেও শান্তিপূর্ণ ছিল হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি। 
সহকারী হাইকমিশনে হামলার তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এ হামলা পরিকল্পিত। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বিফ্রিংয়ে বলেছেন, সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে দেশ-বিদেশ থেকে। সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের মিডিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে শক্ত হাতে দমন করা হবে। 

গুজব ছড়িয়ে নজিরবিহীন হামলা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এর পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। জুলাই গণহত্যায় হাজারের বেশি প্রাণহানির জন্য সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক ও অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব। শেখ হাসিনাকে দিল্লিতে আশ্রয় দেওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ। 

অভ্যুত্থানকে ইসলামী চরমপন্থিদের উত্থান আখ্যা দিয়ে ভারতের কিছু গণমাধ্যম ৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের অতিরঞ্জিত এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুয়া খবর প্রচার করছে। 

গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর মুক্তি দাবিতে বিজেপি এবং দলটির আদর্শের অনুসারী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এই গ্রেপ্তারকে সংখ্যালঘু নিপীড়নের অংশ বলছেন তারা। তাদের ভাষ্য, ৫ আগস্টের পর শত শত হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবি, নিহতের সংখ্যা ৯। যদিও এ তালিকায় জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। ফ্যাক্টচেকারদের তথ্যানুযায়ী, একটি হত্যাকাণ্ডে সাম্প্রদায়িকতার কিছু যোগসূত্র পাওয়া গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তি দাবিতে গতকাল আগরতলায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি সমাবেশ করে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সামনে। সংগঠনের ছয়জনের প্রতিনিধি দল হাইকমিশন কার্যালয়ে যায় স্মারকলিপি দিতে। এ সময় বাইরে থাকা গেরুয়া ঝান্ডাধারী কিছু যুবক হাইকমিশন কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। হাইকমিশনের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে আগুন দেয়। 

হামলার ভিডিওতে দেখা গেছে, পতাকা নামিয়ে ছেঁড়ার পর ত্রিপুরা পুলিশ হামলাকারীদের বের করার চেষ্টা করে। তবে কাউকে আটকের চেষ্টা দেখা যায়নি। ঘটনাস্থলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্যদেরও দেখা গেছে ভিডিওতে। তারা ছিলেন নিষ্ক্রিয়। তবে ঘটনার পর ত্রিপুরা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সহকারী হাইকমিশনে যান। আশ্বস্ত করেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।

আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতার পথে চলা শ্যামলী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস গত শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুর্ঘটনায় পড়ে। ত্রিপুরার পরিবহনমন্ত্রী ও ভারতের একাধিক গণমাধ্যম একে হামলা বলে দাবি করে। এর জেরে গতকাল সহকারী হাইকমিশনের সামনে জমায়েত হওয়া ব্যক্তিদের খেপিয়ে তোলা হয়। এরপর হিন্দুত্ববাদীরা হামলা করে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম কলকাতা টোয়েন্টিফোর সেভেনের খবরে বলা হয়েছে। 

তবে গত রোববারই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান ও শ্যামলী পরিবহনের বাসটির চালক আসাদুল হক নিশ্চিত করেন, হামলা হয়নি। ট্রাক ওভারটেক করার সময় বাসটি ধাক্কা দেয় একটি অটোভ্যানকে। এ নিয়ে ভ্যানচালক ইব্রাহিম ও বাসচালকের কথাকাটাকাটি হয়। হাইওয়ে পুলিশ ভ্যানটি উদ্ধার করে। কিন্তু ভারতীয় যাত্রীদের সঙ্গে স্থানীয়দের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়নি।

ভারতীয় গণমাধ্যমে বাসে হামলার খবরে চালক বিস্মিত হওয়ার কথা বললেও ত্রিপুরার পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী তাঁর ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে বাসের ছবি পোস্ট করে লেখেন, বাসটিকে দুর্ঘটনায় ফেলতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধাক্কা দেয় পণ্যবাহী ট্রাক। এ সময় স্থানীয়রা ভারতীয় যাত্রীদের ক্রমাগত হুমকি দেয়। ভারতবিরোধী স্লোগান ও কটূক্তি করে। ভারতের গণমাধ্যম টিভিনাইন ‘আর কত নামবে? বাংলাদেশে আক্রান্ত কলকাতাগামী বাস, ভারতীয়দের দিল প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামলা হয় আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে।

সীমান্তে বিশৃঙ্খলা, বাণিজ্য বন্ধের হুমকি 
গতকাল বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে সমাবেশ করে ভারতীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, তাদের অনেকে শূন্যরেখা অতিক্রম করে। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে গতকাল পেট্রাপোলে সীমান্তে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। এরপর মিছিল করে জিরো পয়েন্টে এসে সমাবেশকারীরা বাংলাদেশবিরোধী স্লোগান দেয়। শুভেন্দু বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এটি কেবল ট্রেলার। এরপর আগামী বছরে লাগাতার বাণিজ্য বন্ধ করে দেব। এরপর ওরা কীভাবে আলু-পেঁয়াজ খায়, সেটি আমরা দেখিয়ে দেব।’ 

এদিকে সীমান্ত বন্ধের শঙ্কায় সোমবার সকাল থেকে অনেককেই বাংলাদেশে ফিরে যেতে দেখা যায়। শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে ভারতের শ্রীভূমি (করিমগঞ্জের) সনাতনী ঐক্য মঞ্চ নামে সংগঠনের বিক্ষোভকারীরা। সোমবার দুপুরে ‘চল বাংলাদেশ’ কর্মসূচির নামে ভারতের শ্রীভূমি শুল্ক স্টেশন অবরোধ করে তারা। 

এর আগে সকালে প্রায় ছয় টন কমলা আসার পর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের এলসি করা পণ্যবাহী গাড়ি দুই পার থেকে ফেরত যায়। তা নিশ্চিত করে জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভারতীয় কর্মকর্তারা ফোন ধরছেন না। 

এদিকে সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতে রপ্তানি করা আলু, কেকসহ কিছু পণ্য সনাতনী ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা করিমগঞ্জে পুড়িয়ে ফেলে। বাংলাদেশি পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেয়। 

এদিকে ফেনীর সীমান্তবর্তী পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরের ভারত অংশেও বাংলাদেশবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে সনাতনী হিন্দু সমাজের ব্যানারে। বিএসএফের কাছে প্রতিবাদ জানিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বলেছে, বিলোনিয়া স্থলবন্দরের ওপারে ৫০ থেকে ৬০ জন ভারতীয় নাগরিক জড়ো হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। তারা ইসকনের পক্ষে এবং বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেয়। বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য ও বিদ্যুৎ রপ্তানি বন্ধের দাবিতেও স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় ভারতের নো ম্যানস ল্যান্ড অংশে ঢুকে বাংলাদেশের দিকে মাইক তাক করে উচ্চ শব্দে প্রায় আধাঘণ্টা নানা স্লোগান দেওয়া হয়। 

মহারাষ্ট্রে উপহাইকমিশনের সামনে হিন্দু পরিষদ
মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে সোমবার বিকেলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কয়েকশ নেতাকর্মী বিক্ষোভ করে। তারা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বাংলাদেশ মিশনের প্রায় এক থেকে দেড়শ গজের মধ্যে অবস্থান নেয়। জানা গেছে, বিদেশি মিশনের আশপাশে সমাবেশ হলে তা আগাম জানায় স্বাগতিক দেশ। ভারত গতকালের বিক্ষোভের বিষয়ে জানায়নি উপহাইকমিশনকে। 

যা বলছে ভারত
১৯৬১ সালের ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী, সহকারী হাইকমিশন বাংলাদেশের সার্বভৌম সম্পদ। সেখানে ভারতের আইন প্রযোজ্য নয়। কূটনৈতিক দায়মুক্তি থাকায় কোনো দেশের দূতাবাসে স্বাগতিক দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রবেশ করতে পারে না। কীভাবে হামলা হয়েছে– এ ব্যাখ্যা দেয়নি ভারত। 

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনার দুই ঘণ্টার মধ্যে বিবৃতিতে জানায়, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসের হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম গতকাল রংপুরের পীরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে বলেছেন, ভারতের গণমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে। দেশীয় গণমাধ্যম সত্য প্রচার করে এর জবাব দিতে পারে। সত্যিটা প্রকাশ পেলে যারা মিথ্যা রটাচ্ছে, তাদের মুখে চুনকালি পড়বে।

বন্ধুত্ব রক্ষায় প্রস্তুত বাংলাদেশ
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, এ দেশের মানুষ ভারতবিরোধী নয়। ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষায় প্রস্তুত। যাকে নিয়ে ঘটনার সৃষ্টি, সেই চিন্ময় দাসের সঙ্গে সম্পর্ক নেই বলে ইসকন জানিয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ ধর্মকে ব্যবহার করছে; এটা দেশের জন্য শুভকর নয়।

বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার বন্ধ করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চট্টগ্রামে ভারতীয় উপহাইকমিশনারকে দেওয়া স্মারকলিপিতে হেফাজত বলেছে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতনের মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতাকে ভুলভাবে চিত্রিত করছে, যা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক সমাজ ও তৌহিদি জনতার পক্ষ থেকে ভারতের প্রতি হুমকি নেই। 

ফেসবুকে নিন্দা দুই উপদেষ্টার
হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি এই ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক’ আখ্যা দিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা লিখেছেন– ভারতকে বলি, আমরা সমমর্যাদা আর সমানাধিকারভিত্তিক বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। শেখ হাসিনার সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার লোভে ভারত-তোষণ নীতিতে বিশ্বাসী ছিল। তবে ভারতকে বুঝতে হবে– এটা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নয়। এই বাংলাদেশ স্বাধীন, সার্বভৌম ও আত্মমর্যাদাশীল। এই বাংলাদেশ নির্ভীক একটি তরুণ সম্প্রদায়ের।

এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া রাত ১০টায় ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন– যদি ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সহায়তা চাইতে পারে। সে ক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য সহায়তা বাড়িয়ে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ।
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2