avertisements 2

পথ ভুলে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করে ৬ ফেরি, দুর্ভোগ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:১১ পিএম, ৯ ডিসেম্বর, বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০৭:০৬ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

প্রায় ১০ ঘণ্টা পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে পাটুরিয়া প্রান্তে দুই শতাধিক যাত্রীবাহী বাস এবং তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকরা।

এ ছাড়া দৌলতদিয়া প্রান্তে কুয়াশার মধ্যে পথ ভুলে ৬ ফেরি এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করে। একপর্যায়ে ফেরিগুলো মাঝ পদ্মায় নোঙর করে রাখা হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই নৌরুটে ফেরি চলাচল ফের স্বাভাবিক হয়।

এর আগে রোববার রাত ১২টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া প্রান্তে সাতটি এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে দুটি ফেরি পন্টুনে অবস্থান করে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৫টি ফেরি যানবাহন পারাপারে নিয়োজিত রয়েছে। তবে কুয়াশার কারণে নৌপথ দেখতে না পাওয়ায় রোববার রাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়।

সূত্র জানায়, রাত ১০ টার পর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে আববাহিকা পদ্মা নদী কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে রাত ১২টার দিকে কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে গেলে দিক হারিয়ে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে ছেড়ে যাওয়া ছয়টি ফেরি মাঝ নদীতে এদিক সেদিক যেতে থাকে। একপর্যায়ে ফেরিগুলো বাধ্য হয়ে মাঝ নদীতে নোঙর করে রাখা হয়।

এদিকে পারাপার বন্ধ থাকায় ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস এবং পণ্যবাহী গাড়ি পাটুরিয়াঘাট এলাকায় আটকা পড়ে। এসব যাত্রীবাহী বাস পাটুরিয়া-উথলীসংযোগ সড়কে দীর্ঘ সারিতে নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে।

এ ছাড়া পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে পাটুরিয়ায় টার্মিনাল ও উথলী মোড় এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুয়াশার তীব্রতা কমে গেলে ফেরি চলাচল পুনরায় শুরু হয়। এ সময় মাঝ নদীতে আটকে থাকা ফেরিগুলো যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে গন্তব্যের দিকে যাত্রা করে।

ফরিদপুরগামী একে ট্রাভেলস পরিবহনের যাত্রী খালেদ মাহমুদ বলেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলা সদরেই তার গ্রামের বাড়ি, থাকেন ঢাকার মালিবাগে। গ্রামের বাড়িতে যেতে রাত ১০টার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে বাসে ওঠেন।

রাত ১২টার দিকে পাটুরিয়াঘাটের কাছাকাছি এসে বাসটি আটকা পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ঘন কুয়াশার কারণে ইতিমধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে বাসের মধ্যেই সারারাত কাটিয়েছেন।

ঈগল পরিবহনের একটি বাসে করে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা থেকে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় যাচ্ছিলেন শামসুল আলম। রাত সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতদিয়া প্রান্তে শাহ পরাণ ফেরিতে করে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে কুয়শার মধ্যে পথ ভুল করে ফেরিটি এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। একপর্যায়ে ফেরিটি মাঝ পদ্মায় নোঙর করে।

সারারাত কুয়াশার মধ্যে নদীর মাঝে আটকে থাকার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এই পথ দিয়ে প্রায় যাতায়াত করেন। তবে এই রকম দুর্ভোগে আগে পড়েননি।

ভূক্তভোগী কয়েকজন যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ঘাট এলাকায় রাতের বেলা ভালো কোনো খাবার হোটেল খোলা থাকে না। সারা রাত তাদের অনেককে বিস্কুট-কলা খেয়ে থাকতে হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবহার উপযোগী কোনো শৌচাগারও নেই। প্রকৃতির কাজ সারতে নারী যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

পাটুরিয়া ট্রাক টার্মিনালে আটকে থাকা পণ্যবাহী ট্রাকচালক রেজাউল করিম বলেন, রোববার রাত থেকে নদী পারের অপেক্ষায় আছি। কুয়াশায় সারা রাত ফেরি বন্ধ ছিল। ফেরি চলা শুরু হলেও শুধু যাত্রী ও বাস পার করা হচ্ছে। আমাগো কষ্ট কেউ দেখে না।

ট্রাফিক পুলিশ এবং ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল ও পারাপার বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যানবাহনের তীব্র চাপ পড়েছে। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত পাটুরিয়া প্রান্তে দুই শতাধিক যাত্রীবাহী বাস এবং তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সালাম মিয়া বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে সাড়ে ৯ ঘণ্টা ফেরি ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাটে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। তবে যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে যাত্রীবাহী বাসগুলোকে আগে পারাপার করা হচ্ছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2