২ লাখ টাকা দাবি প্রধান শিক্ষকের, পরীক্ষা দিতে পারল না ৩ শিক্ষার্থী
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৪ মে,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ০২:০৯ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
গাজীপুরের কাশিমপুরে ৭০ হাজার করে টাকা দিতে না পারায় এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারল না মেধাবী তিন শিক্ষার্থী। এমন অভিযোগ করে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসির তিন পরীক্ষার্থী ও তার পরিবার। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত পরিবার। পরীক্ষা দিতে না পারায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ওই তিন শিক্ষার্থী।
কাশিমপুর মেট্রো থানার সারদাগঞ্জ এলাকার মেরিগোল্ড হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ ও অক্সফোর্ড কলেজ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের রেষারেষির কবলে পড়ে জেরিন সুলতানা (রোল নং ১), হাসনাত জাহান রক্সি (রোল নং ৩) ও মো. সজিব ইসলাম (রোল নং ১৩)। তারা এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি।
অক্সফোর্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহীন আলম বলেন, মেরিগোল্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সেলিম উল্লাহ স্যার ওই শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ার কারণে তাদের ফরম পূরণ করতে পারিনি। তিনজনই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারাটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তবে আমাদেরও দোষ ছিল। আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের পরবর্তী যা যা করণীয় এবং শিক্ষার্থীদের যাবতীয় খরচ বহন করব।
সজিবের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি কয়েকবার সেলিম স্যারের কাছে টিসি আনতে গেলে টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে আমি ১৮ হাজার টাকা ধার করে নিয়ে গেলেও টিসি দেননি। পরে অক্সফোর্ড স্কুলের শাহীন স্যারকে বিষয়টি জানালে টিসি আনতে হবে না বলে তিনি জানান। পরীক্ষার আগে শাহীন স্যারের কাছে ফরম ফিলাপের সমস্ত টাকা পরিশোধ করি। তবুও আমার সন্তানসহ তিনজন পরীক্ষা দিতে পারল না। আমি এর বিচার চাই।
সেলিম স্যারের কাছে গেলে প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য ৬৫/৭০ হাজার টাকা করে দাবি করেন বলে অভিযোগ সজিবের বাবার। তিনি আরও বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়ে ওই স্কুল থেকে চলে এসেছে দুই বছর আগে। তিনি আমাদের না জানিয়ে গোপনে কেন রেজিস্ট্রেশন করেছেন? এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রুক্সির মা বলেন, আমার মেয়ের মুখের দিকে চেয়েও তাদের মন গলেনি। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল। জেরিনের বাবা জাকির হোসেন বলেন, ২০ হাজার টাকা ধার করে নিয়ে গিয়েছিলাম সেলিম স্যারের কাছে। বাকি ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছিলাম দুই দিন। কিন্তু তিনি সময় দেননি। আমার মেয়ের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল। এর দায়ভার কে নেবে।
সেলিম বলেন, তারা অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর আর স্কুলে আসেনি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দুই বছর তারা স্কুলে না এলেও আমি রেজিস্ট্রেশন করে রেখেছি। তারা যেহেতু টিসি নেয়নি এজন্য গত দুই বছরের বেতন দাবি করেছি।
৭০ হাজার টাকার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, কিছু টাকা কম চাওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাশিমপুর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ রাফিউল করিম রাফি বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।