avertisements 2

ফের বিনা ভোটে জয়ের হিড়িক

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৩৮ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪

Text

প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন অনেকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচনও চলতি মাসেই অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের ধারাবাহিকতায় এবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনা ভোটে প্রার্থীদের জয় পাওয়ার হিড়িক পড়েছে। এই প্রার্থীদের সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনীত। 

নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে দুই ধাপের ভোটে ছয় শতাধিক প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ের পথে। তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন ১১ নভেম্বর। ইসি সচিবালয়ে মাঠ পর্যায় থেকে সব শেষ পাওয়া তথ্যে সেদিনই জানা যাবে মোট কতজন প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন।

তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এভাবে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পাওয়ার এমন ঘটনাকে ইতিবাচক ভাবে দেখছেন না বিশ্লেষকেরা। এটা গণতন্ত্রের জন্য দুঃসংবাদ বলে মনে করছেন তাঁরা। 

ইসি জানায়, আগামী ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় পরবর্তী ধাপের ভোটগ্রহণের জন্যও সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে মনোনয়ন বাছাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় আছে এখনো।

এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায় থেকে পাওয়া ইসির কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে ৩১৩ প্রার্থীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তাঁদের বিপক্ষে ভোটের লড়াইয়ে কেউ মনোনয়নপত্রও জমা দেননি। শেষ পর্যন্ত ১১ নভেম্বর কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সেদিনই তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন। 

গত মঙ্গলবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তৃতীয় ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদে মোট ৫৩ হাজার ৮০১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৩, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭০ ও সাধারণ সদস্য পদে ২০০টি পদে একক প্রার্থী রয়েছে। অবশ্য এই সংখ্যাটা শেষ পর্যন্ত কমা বা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান আরজু বলেন, এখন পর্যন্ত মোট কতজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন তা এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত কম-বেশি হয়। 

এদিকে আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৮টি ইউপিতে একক প্রার্থী থাকায় চেয়ারম্যান পদে ৮১, সংরক্ষিত নারী পদে ৭৬ ও সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছেন। এই ধাপে তিন পদে মোট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করছেন ৩৬০ জন প্রার্থী। যেখানে প্রথম ধাপে ৩৬৯ ইউপিতে ৬৯ চেয়ারম্যান বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য ৬ জন ও ৬৩ জন সাধারণ সদস্য বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এই ধাপে তিন পদে মোট ১৩৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেন। 

দেশে একের পর এক নির্বাচনগুলোতে বিনা ভোটে জয় পাওয়ায় গণতন্ত্রের জন্য দুঃসংবাদ বলে মনে করছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সব ক্ষেত্রে দায়ী করা যায় না। তারা তো সবাইকে ভোটে অংশ নিতে আহ্বান জানায়। কিন্তু সবাই না এলে তো কিছু করার থাকে না। তবে এত প্রার্থী ভোটের আগেই জয় পেয়ে যাওয়াটা গণতন্ত্রের জন্য দুঃসংবাদ। আমরা সবাই চাই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক।

মাঠপর্যায় থেকে ইসি সচিবালয়ে আসা তথ্য থেকে জানা যায়, তৃতীয় ধাপের ইউপি ভোটে চেয়ারম্যান পদে ৫ হাজার ২৮৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২০টি রাজনৈতিক দলের রয়েছেন ১ হাজার ৭৪৭ জন এবং ৩ হাজার ৫৩৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ হাজার ৪৬৯টি এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৭ হাজার ৪৭টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।

দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ৯৮১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৪৩৮, জাতীয় পার্টি ১৮৭, জাকের পার্টির ৬৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ২৫ জন প্রার্থী দিয়েছে।

এই ধাপে ৩১টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রথম ধাপে এরই মধ্যে ৩৬৯টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করেছে ইসি। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর ৮৪৮ ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2