অমুসলিমদের জন্য মৃত্যুর পরে দোয়া
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৫০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
মন- পরপারে শান্তিতে থাকুন, কবরে শান্তিতে বিশ্রাম নিন, ঈশ্বর আপনাকে মাফ করুন, এ জাতীয় দোয়া করা সম্পূর্ণ হারাম। সুনানে নাসায়িতে সাঈদ রহ:-এর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, যখন আবু তালিবের মৃত্যু সমুপস্থিত হলো তখন রাসূল সা: তার কাছে এলেন এবং সে সময় তার সামনে আবু জাহেল ও আবদুল্লাহ ইবনে আবু উমাইয়্যাও ছিল। তিনি বললেন, ‘হে চাচাজান! আপনি একবার বলুন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
আমি এর দ্বারা আপনার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করব।’ তখন আবু জাহেল ও আবদুল্লাহ ইবনে আবু উমাইয়্যা বলল, হে আবু তালিব, আপনি কি আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম থেকে ফিরে যাবেন? তারা সার্বক্ষণিকই এ কথা বলতে লাগল। শেষ পর্যন্ত তার মুখ দিয়ে শেষ শব্দ যা বের হয়েছিল তা হলো- আমি আবদুল মুত্তালিবের ধর্মে থেকেই মৃত্যুবরণ করছি। তখন রাসূল সা: তার জন্য বললেন, ‘আমি আপনার জন্য অবশ্যই মাগফিরাত চাইব, যতক্ষণ না আমাকে নিষেধ করা হয়।’ (হাদিস নং-২০৩৫)
তখন নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়, ‘নবী ও মুমিনদের জন্য বৈধ নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, যদিও তারা নিকটাত্মীয়ই হোক না কেন, এ কথা প্রকাশ হওয়ার পর যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী।’ (সূরা তাওবা, আয়াত-১১৩)
এখন স্বাভাবিকভাবেই আমাদের অন্তরে একটি প্রশ্ন উদয় হতে পারে যে, হজরত ইবরাহিম আ:-ও তো তাঁর পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। অথচ তাঁর পিতা ছিল মুশরিক। এটি নতুন কোনো প্রশ্ন নয়। সাহাবায়ে কেরামদের অন্তরেও উদয় হয়েছিল। এ প্রশ্নের উত্তর আল্লাহ তায়ালা কুরআনে কারিমে স্পষ্টভাবে দিয়েছেন। তার শানে নুজুলসহকারে উল্লেখ করা হলো- হজরত আলী রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে তার মুশরিক পিতা-মাতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে শুনলাম।
আমি তাকে বললাম, তোমার মৃত পিতা-মাতার জন্য কি তুমি ক্ষমা প্রার্থনা করছ, অথচ তারা ছিল মুশফিক? সে বলল, ইবরাহিম আ: কি তার বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেননি, অথচ তাঁর বাবা ছিল মুশরিক? আমি বিষয়টি রাসূল সা:-এর কাছে উল্লেখ করলাম। তখন নিম্নোক্ত আয়াত নাজিল হলো।’ (সুনানে নাসায়ি-৩১০১) অর্থাৎ সূরা তাওবার ১১৩ ও ১৪ নম্বর আয়াত দু’টি অবতীর্ণ হয়। ‘নবী ও মুমিনদের জন্য বৈধ নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যদিও তারা নিকটাত্মীয়ই হোক না কেন, এ কথা প্রকাশ হওয়ার পর যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী।’ (সূরা তাওবা-১১৩) ‘আর ইবরাহিমের ক্ষমা প্রার্থনা তার পিতার জন্য শুধু সেই ওয়াদার কারণে, যেই ওয়াদা সে তার সাথে করেছিল।’ (সূরা তাওবা-১১৪)
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেল যে, কোনো কাফির মারা গেলে তার জন্য পরপারে ভালো থাকার কিংবা মাগফিরাত কামনা করা জায়েজ নয়; বরং হারাম বা নিষিদ্ধ। এখন আপনি বিবেচনা করুন। কোন দৃষ্টিকোণ থেকে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন?