পরকীয়ার জন্য দুনিয়া-আখেরাতে পেতে হবে ভয়াবহ শাস্তি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:৫৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম নারী-পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ককে জেনা বলা হয়। এ জন্য যে সব কাজ জেনার প্ররোচনা দেয় সেগুলোও ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
একটি হাদিসে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, চোখের ব্যভিচার হলো দেখা, কানের ব্যভিচার শোনা, জিহ্বার ব্যভিচার বলা, হাতের ব্যভিচার ধরা, পায়ের ব্যভিচার হাঁটা, মন কামনা করে আর লজ্জাস্থান তা সত্য বা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহিহ মুসলিম: ২৬৫৭)
ইসলাম একান্ত প্রয়োজন ছাড়া পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলাকে নিষিদ্ধ করেছে। এ জন্য পুরুষ-মহিলা সবাইকে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হইও না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ। (সুরা বনি ইসরাইল: ৩২)
অবিবাহিত নারী-পুরুষের ব্যভিচারের শাস্তির বর্ণনা দিয়ে আল্লাহ বলেন, ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী উভয়কে ১০০ ঘা করে বেত্রাঘাত কর। (সুরা নুর: ২)
আর পরকীয়া তথা বিবাহিত নারী-পুরুষের অশ্লীল কাজের শাস্তি হিসেবে পাথর মেরে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে ইসলামী শরিয়ত।
উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, তোমরা আমার নিকট থেকে বিধানটি সংগ্রহ করে নাও। তোমরা আমার নিকট থেকে বিধানটি সংগ্রহ করে নাও। আল্লাহ বিবাহিত নারী-পুরুষের অশ্লীল কাজের শাস্তি হিসেবে একটি ব্যবস্থা দিয়েছেন। অবিবাহিত যুবক-যুবতীর শাস্তি হচ্ছে, ১০০টি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ ও মহিলার শাস্তি হচ্ছে, ১০০টি বেত্রাঘাত ও রজম তথা পাথর মেরে হত্যা করা। (সহিহ মুসলিম: ১৬৯০; আবু দাউদ: ৪৪১৫, ৪৪১৬; তিরমিজি: ১৪৩৪; ইবন মাজাহ: ২৫৯৮)
ব্যভিচারী নারী-পুরুষের মধ্যে একজন বিবাহিত ও অন্যজন অবিবাহিত হলে বিবাহিতের রজম তথা পাথরের আঘাতে হত্যা করতে হবে এবং অবিবাহিতকে ১০০টি বেত্রাঘাত করতে হবে।
শুধু তাই নয়, পরকালে শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে চাইলে খালেস অন্তরে তাওবা করতে হবে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, গুনাহ থেকে তাওবাকারীর অবস্থা এমন, যেন তার কোনো গুনাহ নেই। (ইবনে মাজাহ: ৪২৫০; শুআবুল ঈমান: ৭১৯৬, সহিহুত তারগিব: ৩১৪৫)
এ ছাড়াও যারা লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, তাদের বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মুখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের জামিনদার হবে আমি তার বেহেশতের জামিনদার হব। (বুখারি: ৭৬৫৮)
ইসলাম দেবরের সঙ্গে দেখা করাকে কঠিন গুনাহের কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছে। হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, সাবধান, তোমরা নির্জনে নারীদের কাছেও যেও না। এক আনসার সাহাবি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, দেবর সম্পর্কে আপনার নির্দেশ কী? হজরত মুহাম্মদ (সা.) বললেন, দেবর তো মৃত্যুর সমতুল্য। (মুসলিম: ২৪৪৫)
যে মানুষ ব্যভিচারে অভ্যস্ত হয় সে ধীরে ধীরে ঈমান ও আমল থেকে বঞ্চিত হতে থাকে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, কোনো মানুষ যখন ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেড়িয়ে যায় এবং এটি তার মাথার ওপর মেঘখণ্ডের মতো ভাসতে থাকে। এরপর সে যখন তাওবা করে, তখন ঈমান আবার তার কাছে ফিরে আসে। (আবু দাউদ: ৪৬৯০)।