avertisements 2

আ.লীগের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি: কে এই মুকিব মিয়া?

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৫ | আপডেট: ০৯:৫০ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৫

Text

ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিলেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা মুকিব মিয়া। শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লিফলেট বিতরণ করেন তিনি। যা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেও শেয়ার করেছেন তিনি।

  মুকিব মিয়া বর্তমানে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মুকিব মিয়া ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

  মুকিব মিয়ার ফেসবুক প্রোফাইলে দেখা যায়, শুধু লিফলেট বিতরণই নই, তিনি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সমর্থক ছিলেন। গত ২৭ মার্চ প্রোফাইল ছবি হিসেবে আপলোড করা শেখ হাসিনার ছবিতে লেখা রয়েছে, বিজয় আসবেই।
  চাকরিবিধি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীর সামাজিক মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ না থাকলেও ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কড়া সমালোচক মুকিব মিয়া।

 ৫ আগস্টের পর ‘লোভে পাপ, পাপে ইউনূস’; ‘ইউনূস বাহিনীর নির্যাতন নাৎসি হিটলারকেও হার মানায়’; ‘ইউনূসের নাৎসি বাহিনীর ছোবল থেকে রেহাই পেল না শিক্ষার্থীরা’; ‘বাংলাদেশকে গৃহযুদ্ধে ঠেলে দিতে মব সংস্কৃতি চালু করেছে অবৈধ ইউনূস সরকারের উপদেষ্টারা। জাতিকে প্রস্তুত হতে হবে, অরাজকতা রুখতে হবে’; ‘বিয়ে করতে, প্রেম করতেও ট্যাক্স দিতে হবে ইউনূসকে। কারণ সে সুদি কারবারি’; ‘ইউনূস ঠেলা সামলা’; ‘জঙ্গি ইউনূসের দিন শেষ’সহ বিভিন্ন লেখা ফেসবুকে লিখেছেন মুকিব।

জানা গেছে, এসব লেখাকে ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ৩(খ) ধারা অনুযায়ী আচরণবিধি লঙ্ঘন উল্লেখ করে গত ২০ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ মুকিব মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে। কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না, তা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে নোটিশ দেওযা হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে ইচ্ছুক কিনা, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টানা ১০ বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে ছিলেন মুকিব। তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, সে সময়েও নিয়মিত আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতেন তিনি।


অথচ সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না।’ এ ধারা লঙ্ঘনের শাস্তি চাকরিচ্যুতি।

 মুকিব মিয়ার ভাষ্য, তিনি লিফলেট বিতরণ করে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেননি। তিনি বলেন, ড. ইউনূস সংবিধান লঙ্ঘন করছেন, এর প্রতিবাদ করছি। আওয়ামী লীগও প্রতিবাদ করছে। তাই আওয়ামী লীগের লিফলেট আমার নেতৃত্বে বিতরণ করেছি। এতে চাকরিবিধি লঙ্ঘন হয়নি। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছে, এ দলের লিফলেট বিতরণ করা আমার অধিকার।


আওয়ামী লীগের পতনের পরও দলটির কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন মুকিব। এ কর্মকর্তাকে গত ৬ অক্টোবর নিরীক্ষা অধিদপ্তর থেকে হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি কাজে যোগ দিয়ে একদিন চাকরি করেন বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ মো. হারুন মিয়া।

পরে গত ২১ অক্টোবর তাকে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বদলি করা হয়।

জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মুকিব মিয়া গত সাড়ে তিন মাসে একবারও আসেননি। তিনি অনলাইনে যোগদানের আবেদন করেছিলেন। তা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তিনি যোগদানের হার্ডকপি জমা দেননি। সম্প্রতি তিনি ৩ মাসের অসুস্থতাজনিত ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু সঙ্গে চিকিৎসকের সুপারিশ, ব্যবস্থাপত্র, অসুস্থতার প্রমাণপত্র কিছুই দেননি। এর পর আর যোগাযোগ নেই।

চাকরিতে যোগ না দেওয়ার বিষয়ে মুকিব মিয়া বলেন, “ছুটির আবেদন করেছি।”

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2