নির্বাচনে ভারতের নসিহত অগ্রহণযোগ্য সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৫ | আপডেট: ০৫:৫৬ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৫
বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য ভারত ধারাবাহিকভাবে যে আহ্বান জানিয়ে আসছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়, এমনটা মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলবের তিনদিনের মাথায় আজ (বুধবার) নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে নির্বাচনের প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে ভারত রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে আসছে ভারত।
দুই দেশের হাইকমিশনারদের তলব-পাল্টা তলব নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা তাদের হাইকমিশনারকে ডেকেছি। আমরা যা কিছু বলেছি, তা থেকে কিছু তারা গ্রহণ করেনি। সে বিষয়ে তাদের কিছু দ্বিমত আছে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও ডেকেছে। এটা খুব অপ্রত্যাশিত না। সাধারণত এটা ঘটে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সর্বশেষ তাদের (ভারতের) যে বক্তব্য এসেছে তাতে কিছু নসিহত করা হয়েছে আমাদেরকে। আমি মনে করি যে এটার কোনো প্রয়োজন আছে আমাদেরকে এভাবে (নসিহত) করার। বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে— এটা নিয়ে আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই সরকার ‘ডে ওয়ান’ থেকে স্পষ্টভাবে বলে আসছে যে আমরা ‘অত্যন্ত উঁচু মানের, মানুষ যেন গিয়ে ভোট দিতে পারে, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই, যে পরিবেশ গত ১৫ বছর ছিল না।
নির্বাচন নিয়ে ভারতের উপদেশ প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, এখন ভারত আমাদেরকে এটা (নির্বাচন) নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। এটা আমি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য মনে করি এই কারণে যে, তারা (ভারত) জানে এর আগে গত ১৫ বছর যে সরকার ছিল, যে সরকারের সঙ্গে তাদের (ভারতের) অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। তখন কিন্তু এই যে নির্বাচনগুলো প্রহসনমূলক হয়েছিল, তখন তারা (ভারত) একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। এখন সামনে আমরা একটা ভালো নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, এই মুহূর্তে তো আমাদের নসিহত করার তো কোনো প্রয়োজন নেই।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা জানি আমরা কি করব। আমরা একটা ভালো নির্বাচন করব যেটাতে মানুষ ভোট দিতে পারবে এবং যাদেরকে ভোট দেবে তারাই নির্বাচিত হবে।
ভারতে বসে শেখ হাসিনার দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্য প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আমরা জানি আগে শেখ হাসিনা ভারতে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দিতেন। এখন প্রতিনিয়ত মূল ধারার গণমাধ্যমেও তার বক্তব্য আসছে এবং সেই বক্তব্যে প্রচুর উসকানি আছে। যিনি একটা আদালত থেকে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছেন, তিনি আমাদের পাশের দেশে বসে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। সেই ক্ষেত্রে আমরা বক্তব্য বন্ধ বা তাকে ফেরত চাইব, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।





