avertisements 2

কোচিং স্টাফের বিশাল বহরের কাজটা কী

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ অক্টোবর,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:৫৩ এএম, ৪ মে,শনিবার,২০২৪

Text

আপনাদের মতো আমার হৃদয়েও বড় ব্যথা লেগেছে। অন্য ম্যাচগুলোতে ফলাফল যাই হোক না কেন, নেদারল্যান্ডসের কাছে আমাদের ছেলেরা হেরে যাবেন এটা একবারের জন্যও ভাবিনি। আমি আগেই বলেছিলাম, নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে এ ম্যাচটা না জেতার কোনো কারণ নেই। কিন্তু আমরা কি দেখলাম, আরও একবার ন্যক্কারজনক দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং। বোলাররা ভালো করলেও ফিল্ডিং ছিল যাচ্ছেতাই। অনেকগুলো ক্যাচ ছেড়েছেন ফিল্ডাররা। মিস ফিল্ডিংয়ে বাড়তি রানও হয়েছে অনেকগুলো। এগুলো না হলে ডাচদের কিন্তু ১৮০ রানের মধ্যে বেঁধে রাখা যেত। সেক্ষেত্রে লক্ষ্যটা ছোট থাকত; জয় পেতেও হয়তো সমস্যা হতো না। 

কিন্তু এসবের কিছুই হয়নি। আমরা এমন একজন অধিনায়ককে পেয়েছে যে কিনা প্রতিটি ম্যাচেই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসে খোঁচা দিয়ে। দলকে রেখে সে মিরপুরে আসে ব্যক্তিগত কোচের কাছে। ফিল্ডাররা এত এত ক্যাচ ছাড়েন, মিস ফিল্ডিং করেন। তাহলে এত এত কোচদের কাজটা কি! তারা দেশের মানুষের টাকা নিয়ে দেশকে কি দিচ্ছেন। বাংলাদেশের মতো বিশাল ও ব্যয়বহুল কোচিং স্টাফ আর কোনো দেশের নেই। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, সহকারী কোচ নিক পোথাস, পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড, স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ, ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমট, সহকারী ফিল্ডিং কোচ ফয়সাল হোসেন ডিকেন্স, পারফর্ম্যান্স অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্র শেখন, ফিজিও মুজাদ্দেদ আলফা সানি ও টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীরাম। বিশেষভাবে বিশ্বকাপের জন্যই টাইগার তাঁবুতে আনা হয়েছে তাকে।  

এত বড় কোচিং ও সাপোর্টিং স্টাফ এবার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী আর কোনো দলের সঙ্গে নেই। কিন্তু কোচিং স্টাফের এত বিশাল বহর থাকার পরও দলের পারফর্ম্যান্স তলানীতে। সেই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে জয়ের পর টানা পাঁচ ম্যাচে হারল সাকিবের দল। মাঝখানে চারটিতে হেরে গেলেও ডাচদের বিরুদ্ধে জয় না পাওয়ার কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু অবিশ্বাস্য সেই দৃশ্যই দেখতে হয়েছে আমাদের। এই হার অবশ্যই লজ্জার। দেশবাসী, ক্রিকেটপ্রেমীদের সঙ্গে ছলনা করার মতো। তারা কতটা আশা আর ভালোবাসা নিয়ে সাকিব, মিরাজদের খেলা দেখেন। আর প্রতিটি ম্যাচেই তার কি বাজে প্রতিদান দিচ্ছেন। বিশ্বকাপে যে তথৈবচ অবস্থা তাতে কিন্তু অনেক প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। এখন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। 

ক্রিকেটার, কোচিং প্যানেল, নির্বাচক, বিসিবিসহ সংশ্লিষ্টদের সবারই দায় নিতে হবে। এখন যে অবস্থা তাতে ক্রিকেটকে যদি সত্যিকার অর্থে বাঁচাতে হয়, একটা ভালো ও শক্ত জায়গায় দেখতে হয় তাহলে কঠোর নিয়ম মানতে হবে। শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে দলে। যার যা খুশি তা করা চলবে না। একজন অধিনায়ক কি করে দলকে রেখে দেশে চলে আসতে পারেন। এসব চিন্তাভাবনা বা সিদ্ধান্ত কাদের মাথা থেকে আসে! কেউ কাউকে মানছেন না; যার যা খুশি করে চলেছে। এমন হলে সম্ভাবনার ক্রিকেট ধ্বংস হতে সময় লাগবে না। সামনে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। এখন হেলাফেলা করলে এর চরম মাশুল দিতে হবে। 

প্রিয় পাঠক, আমরা না পারলেও ডাচরা দেখিয়ে দিয়েছে তাদের মুন্সিয়ানা। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ বাদ দিলে তারা কিন্তু প্রতিটি খেলাতেই লড়াই করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে চলে আসে। ওই জয়ের পর ডাচদের এ আত্মবিশ্বাস জন্মে যে, প্রোটিয়াদের হারাতে পারলে বাংলাদেশকে কেন নয়। তা ছাড়া এ ম্যাচে ওদের চাপও ছিল না। ওরা প্রতিটি ম্যাচেই ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছে। এজন্য ডাচদের সাধুবাদ দিতেই হবে। পক্ষান্তরে আমাদের ক্রিকেটাররা প্রতিপক্ষের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াইটাই করতে পারেনি। তাদের দেখে বড্ড ক্লান্ত অসহায় মনে হয়েছে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2