জোটের সমীকরণ: নীতিশ-নাইডুকে জোটে রাখতে বিজেপিকে কী মূল্য দিতে হবে?
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ১১:১৮ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে জোট গড়ার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই সরকার গঠনের জন্য শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। এই শরিকদের মধ্যে অন্যতম জাস্টিস লীগের নীতিশ কুমার এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চন্দ্রবাবু নাইডু। অন্ধ্র প্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি ১৬টি এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) ১৪টি আসন পেয়েছে।
তাই এই দুজনকে হাতে রাখা বিজেপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ দুজন হাতছাড়া হলে সরকার গঠনের স্বপ্নও হাত ফসকে যেতে পারে। অবশ্য নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ছাড়ছেন না বলে গতকাল বুধবারই জানিয়েছেন দিয়েছেন নীতিশ-নাইডু। এমনকি লিখিত সমর্থনও জানিয়েছেন তাঁরা।
নীতিশ ও নাইডু দুজনই ঝানু রাজনীতিক। জোট সরকারে থাকার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের। দর-কষাকষিতেও তাঁরা বেশ দক্ষ।গত দুইবারের মতো বিজেপি একাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে মিত্রদের যা দিত তা নিয়েই খুশি থাকতে হতো।
কিন্তু এবার বিজেপি সংখ্যাগষ্ঠিতা হারানোয় শরিকদের সামনে দর-কষাকষির দারুণ সুযোগ এনে দিয়েছে এবং প্রবীণ এই দুই রাজনীতিবিদ সেই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিজেপি নেতৃত্বের কাছে কী চাইতে পারে সে ব্যাপারে জেডিইউ এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে। অবশ্য এ বিষয়ে একেবারেই মুখে কুলুপ এঁটেছে টিডিপি। দলটির তরফ থেকে তেমন কিছুই জানা যায়নি। এনডিটিভির সঙ্গে আলাপকালে জেডিইউর জ্যেষ্ঠ নেতা কেসি ত্যাগী বলেছেন, ‘আমন্ত্রণ জানানো হলে’ তাঁর দল সরকারে যোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, নতুন সরকার বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার কথা মাথায় রাখবে। পাশাপাশি দেশব্যাপী জাতিশুমারি করবে। কেসি ত্যাগী অবশ্য স্পষ্ট বলেছেন, এসব বিষয় এনডিএ জোটকে জেডিইউর সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো শর্ত নয়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমর্থন নিঃশর্ত। তবে বিহারের বিশেষ মর্যাদা না পাওয়া পর্যন্ত বেকারত্ব শেষ হবে না। তাই বিহার থেকে এনডিএ যে সমর্থন পেয়েছে, তা মাথায় রেখে আমরা আশা করি, একে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ জোটে থাকতে জেডিইউর শর্তগুলোর বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও টিডিপির দাবি-দাওয়া সম্পর্কে এখনো তেমন কিছু জানা যায়নি।
দলীয় সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রণালয় চাইতে পারে টিডিপি। আরেকটি মূল বিষয় হিসেবে অন্ধ্র প্রদেশের অগ্রাধিকারমূলক মর্যাদা আলোচনায় আসতে পারে। মূলত এই বিশেষ মর্যাদার দাবি নিয়ে বিরোধের জেরেই ২০১৬ সালে বিজেপির ছায়া থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন নাইডু।
আপাতত টিডিপি ও জেডিইউ উভয়েই জোর দিয়ে বলেছে, তাঁরা এনডিএর সঙ্গেই রয়েছে। কিন্তু দুই কিংমেকারের নাম যখন চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতিশ কুমার, তখন কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সূত্র : এনডিটিভি