বিদেশে থাকেন, চোরের দল নিয়ন্ত্রন করেন দেশে!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২১ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৩১ এএম, ১৯ জানুয়ারী,রবিবার,২০২৫
সাত বছর ধরে ফ্রান্সে বসবাস করছেন এক ব্যক্তি; কিন্তু সেখান থেকে বাংলাদেশে চোরের একটি দলের বাসা ভাড়া থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে আর্থিক সহায়তা করে আসছেন তিনি। এ মাসের শুরুতে ঢাকার কচুক্ষেত ভাসানটেকের একটি জুয়েলারির দোকানে চুরির ঘটনায় তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)।
বিষয়টি নিয়ে রোববার দুপুরে পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিবি প্রধান একেএম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, চুরির ওই ঘটনায় শনিবার রাতে মুন্সীগঞ্জ থেকে মনজুরুল হাসান শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা ও ইমিটেশন গয়না উদ্ধার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে হাফিজ বলেন, কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারের রাঙ্গাপরী জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় শামীমসহ তাদের একটি চক্র জড়িত।
“এ চক্রের ‘মূলহোতা’ ফ্রান্স প্রবাসী নাসির। সে শামীমের মাধ্যমে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও প্রাথমিক অর্থের যোগান দিয়ে থাকে। বাসা ভাড়া নেওয়া এবং চক্রের খরচ সবই করছে নাসির।”
হাফিজ বলেন, “৫০ বছর বয়সী নাসির সাত বছর আগে ফ্রান্সে চলে যায়, দেশে থাকতেও চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল। তার বাড়ি বাগেরহাটে; তবে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি চুরির মামলা রয়েছে।
তার সম্পর্কে আরও তথ্য নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, “চোর চক্রের প্রত্যেক সদস্যের আলাদা আলাদা দায়িত্ব নির্ধারণ করা থাকে এবং তারা সেই অনুযায়ী নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে থাকে।
ইতোপূর্বে তারা ঢাকা মহানগর ও আশপাশ এলাকায় একাধিক চুরি করেছে বলে জানান হাফিজ আক্তার।
গ্রেপ্তার শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কচুক্ষেত ভাসানটেকের ওই দোকানে চুরি করতে চক্রের দুই সদস্য মাসুদ ও ইলিয়াস প্রথমে মিথ্যা নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ওই মার্কেটে সিকিউরিটি গার্ড ও সুইপারের চাকরি নেয়। তারপর চুরির পরিকল্পনার ব্যাপারে তারা অন্যদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঘটনার আগের দিন চক্রের অন্য এক সদস্য শাহীন মাস্টার ওই মার্কেটে দোকান ভাড়া করে মালামাল তোলার নাম করে বক্স বিশিষ্ট টেবিলের মাধ্যমে কৌশলে তালা ভাঙার সরঞ্জামাদি মার্কেটে ঢুকায়।
ডিবি জানায়, অন্য দুই সদস্য শ্রীকান্ত ও তালা ভাঙার মিস্ত্রী রাজা মিয়া মার্কেটে ঢুকে মাসুদ ও ইলিয়াসকে নিয়ে ওই দোকানে চুরি করে। ভোরে তারা কেরানীগঞ্জ হাসনাবাদ এলাকার ভাড়া বাসায় যায়। সেখানে শাহীন ও মঞ্জুরুল হাসান শামীম আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন।
বাসায় পৌঁছানোর পর সকলে মিলে সোনা, ইমিটেশন গয়না ও নগদ টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। এরপর ওই বাসা ছেড়ে তারা আত্মগোপনে চলে যায়।
চক্রটি সাধারণত জুয়েলারি দোকানেই চুরি করত। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান হাফিজ আক্তার।