পেঁয়াজের জন্য ভারতের বিকল্প খোঁজা হচ্ছে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৩ আগস্ট,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৭:১৬ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় দেশে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ছে। এই অবস্থায় বিকল্প দেশ হিসেবে মিয়ানমার, তুরস্ক, মিসর, চীন ও পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানির খোঁজ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গত বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জের আড়তে ভারতীয় নাসিক জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল কেজি ৪৫ টাকা, রবিবার সেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে ৬০ টাকার ওপরে ওঠে। অর্থাৎ কেজিতেই ১৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হয়।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার হিলি বন্দরেই আমি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৩৯ টাকা, শনিবার সেই পেঁয়াজ ৪৭ টাকায় বিক্রি হয়। ৪০ শতাংশ শুল্কারোপের খবরে কেজিতে আরো দাম বাড়ে।’
তিনি বলেন, ‘ভারত যেহেতু ডিসেম্বর পর্যন্ত শুল্কারোপ করেছে, তাই মনে হচ্ছে আগামীতে দাম আরো বাড়বে। এ জন্য বিকল্প দেশ হিসেবে তুরস্ক, পাকিস্তান ও মিসরে খোঁজ নিয়েছি।
তাদের কাছে পর্যাপ্ত মজুদও আছে।’
শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘তুরস্ক থেকে সবচেয়ে কম দামে পেঁয়াজ আনা সম্ভব। জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতে খরচ পড়বে ৪৫ টাকা, মিসর থেকে আনতে ৪৮ টাকা এবং পাকিস্তান থেকে আনতে খরচ পড়বে কেজি ৬০-৬২ টাকা। তবে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি।
চট্টগ্রামের ফলমণ্ডির কয়েক আমদানিকারকও চীন ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানির খোঁজ নিয়েছেন। তাদের একজন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওই দুই দেশ থেকে আমরা ফ্রেশ ফ্রুটস আনি। খোঁজ নিয়ে দেখেছি সেখানে প্রচুর মজুদ আছে পেঁয়াজের। দামও তুলনামূলক কম।’
ফল আমদানিকারক জিএস ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওই দুই দেশ থেকে পেঁয়াজ আনা সম্ভব।
চীন থেকে আনতে ২০-২৫ দিন এবং মিসর থেকে আনতে ২৭-৩০ দিন সময় লাগবে।’
পেঁয়াজ আমদানির জন্য প্রথম ধাপে কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ দপ্তর থেকে আমদানি অনুমতিপত্র নিতে হয়। সেই অনুমতি নিয়ে ঋণপত্র খুলে আমদানি করতে হয়।
উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের উপপরিচালক (আমদানি) মুহাম্মদ লিয়াকত হোসেন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘৫ জুন থেকে গতকাল পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির আইপি নিয়েছে ১৩ লাখ ১৫ হাজার টন। বিপরীতে আমদানি হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার টন। আইপির মেয়াদ থাকে চার মাস। ফলে এই আইপি দিয়ে আমদানির সুযোগ আছে। কিন্তু ভারতের বদলে অন্য দেশ থেকে আনলে নতুন করে আবেদন করতে হবে। কয়েক দিনের মধ্যে জানতে পারব বিকল্প দেশ থেকে আইপির আবেদন পড়েছে কি না।’
জারিফ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুর মোরশেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি মিয়ানমার থেকে সব সময় পেঁয়াজসহ কাঁচা পণ্য আমদানি করি। কিন্তু এখন খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সেখানে কেনা পড়বে ৬৫-৭০ টাকায়। সিঅ্যান্ডএফ খরচ, ড্রাফট খরচ, পরিবহন খরচ যোগ করলে ৮৫ টাকার ওপরে পড়বে। ফলে এই দামে পেঁয়াজ এনে পড়তা হবে না।’
উল্লেখ্য, ভারত নিজেদের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্কারোপ করে প্রজ্ঞাপন দেয় গত শনিবার। এর প্রভাবে রাতারাতিই দেশের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম বেড়ে কেজি ৬০ টাকা ছুঁয়ে যায়। খুচরা বাজারে সেই পেঁয়াজ ৭৫ টাকার ওপরে বিক্রি হয়। চট্টগ্রামের বাজারে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা কম থাকায় সেটির দাম জানা যায়নি।’