avertisements 2

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

আমি অস্ট্রেলিয়ান- কেন আমাকে আনুগত্য প্রমাণ করতে হবে ?

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:১৬ পিএম, ৫ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৪০ এএম, ২৩ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

অ্যান্ড্রু চেন* অস্ট্রেলিয়া সরকারের একজন জুনিয়র উপদেষ্টা। ক'মাস আগে তাকে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা দপ্তরে এক বৈঠকে যোগ দিতে হয়েছিল। অন্য ক'জন সহকর্মীর সাথে ক্যানবেরায় প্রতিরক্ষা দপ্তরের অফিস ভবনে ঢোকার সাথে সাথে একজন নিরাপত্তা কর্মী শুধু তাকে থামিয়ে আলাদা করে অন্য জায়গায় ডেকে নিয়ে যায়।

“লবিতে আমাকে একটি ছবি তুলতে বলা হলো, “ বিবিসিকে সেই অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন মি. চেন।

“শুধু আমাকেই ছবি তুলতে বলা হলো। যে ককেশিয়ান সহকর্মী অমার সাথে ছিলেন, তাকে কিছুই বলা হলো না, “ বললেন মি. চেন যিনি চীনা বংশোদ্ভূত একজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক।

অস্বস্তি এবং অপমানিত বোধ করলেও এ নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তিনি তৈরি করতে চাননি।। নির্দেশ মতো ছবি তুললেন। পরে অন্য সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন তাদের কখনো ঢোকার মুখে ছবি তুলতে হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে বিবিসিকে বলা হয়, ভবনের নিরাপত্তা প্রটোকলে “ব্যক্তির জাতিগত পরিচয়“ কখনই বিবেচ্য নয়।

কিন্তু অ্যান্ড্রু চেনের গভীর সন্দেহ যে তার বেলায় এ কথা একবারেই সত্যি ছিল না। শুধু তিনিই নন, তার মত বহু চীনা বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান এখন মনে করছেন যে চীনের সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক যত তিক্ত হচ্ছে শুধু জাতিগত পরিচয়ের কারণে তাদের ব্যাপারে সন্দেহ, নজরদারি বাড়ছে।


গত অক্টোবর মাসে, তাদের তিনজন - যারা সবাই অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক - অভিবাসীদের নানা সমস্যা নিয়ে সেনেটে এক শুনানিতে সাক্ষ্য প্রমাণ দিতে যান।

কিন্তু শুনানি শুরু হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে তাদের তিনজনকে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির (সিসিপি) “নিন্দা“ করতে বলা হয়। তারা যখন বলেন এই শুনানির সাথে সিসিপির কী সম্পর্ক, সরকারি দলের সেনেটর এরিক অ্যাবেটজ্‌ বার বার তাদের বলেন, “কেন নয়?“

ঐ তিন চীনা বংশোদ্ভূতদের একজন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইয়ুন জ্যাং। তিনি পরে টুইট করেন, “মনে হচ্ছিল গণতদন্তের বদলে যেন কোনো গণ উইচ- হান্ট (ভূতপ্রেত খোঁজা) হচ্ছে।“

ওজমন্ড চিউ নামে আরেকজন তার অভিজ্ঞতাকে ১৯৫০ দশকের যুক্তরাষ্ট্রে কুখ্যাত ম্যাকার্থিজমের সাথে তুলনা করেন যেখানে কল্পিত কম্যুনিস্ট হুমকি মোকাবেলার নামে মানুষজনকে ধরে ধরে বিচার করা হত এবং তাদেরকে দেশের প্রতি আনুগত্যের“ প্রমাণ দিতে হতো।

“স্বপ্নেও আমি কোনাদিন ভাবিনি আমাকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে,“ সিডনি মর্নিং হেরাল্ড পত্রিকায় লেখেন মি. চিউ যিনি পেশায় রাজনীতির গবেষক।


বিবিসিকে তিনি বলেন, “মনে হচ্ছিল যেন তিনি (সেনেটর অ্যাবেটজ্‌) আমাদের তিনজনকে বকাঝকা করতেই ডেকেছেন। মনে হচ্ছিল, আমাদের কাছ থেকে সাক্ষ্য প্রমাণ শোনার চেয়ে তিনি আমাদেরকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করতেই উন্মুখ।“

বিরোধীরা তাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ দিলে মি. অ্যাবেটজ্‌ তা প্রত্যাখ্যান করেন। বরঞ্চ তিনি উল্টো একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন তার শিরোনাম ছিল : “ কুৎসিত একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো প্রত্যেকের দায়িত্ব, মি চিউ।“

কেন চীনা বংশোদ্ভূতদের দিকে সন্দেহের তীর
অস্ট্রেলিয়ার এক নম্বর বাণিজ্য সহযোগী দেশ চীন। এই সহযোগিতা দুই দেশকেই সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া চীনকে নিরাপত্তা হুমকি হিসাবে দেখতে শুরু করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা গোয়েন্দা বিভাগ (এএসআইও) ২০১৭ সালে প্রথম সতর্ক করে যে চীন অষ্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করছে। ঐ বছরই চীনা একজন রাজনৈতিক তহবিল-দাতার সাথে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠলে, একজন সেনেটর পদত্যাগ করেন।

২০১৮ সালে বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া নতুন এক আইন পাশ করে। কয়েকমাস পরেই, নিরাপত্তা ঝুঁকির যুক্তি তুলে ধরে অস্ট্রেলিয়া তাদের ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করে।

অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টে, রাজনৈতিক দলের সাইটে, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং কতগুলো বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পর পর বেশ ক'টি সাইবার হামলা হয় যেগুলোর জন্য চীনকে সন্দেহ করা হয়। এছাড়া, হংকং পরিস্থিতি, শিনজিয়াংয়ে উইগর মুসলিমদের প্রতি আচরণের ইস্যু এবং চীনে কয়েকজন অস্ট্রেলীয় নাগরিকের গ্রেপ্তারের ঘটনায় চীন-বিরোধী মনোভাব দিনকে দিন আরো চাঙ্গা হয়েছে।

এরপর নভেম্বর মাসে যখন চীনা একজন কর্মকর্তা এমন এক কাল্পনিক ছবি পোস্ট করেন যেখানে দেখা যায় একজন অস্ট্রেলীয় সৈন্য একটি আফগান শিশুকে ছুরি দিয়ে হত্যা করছে - অস্ট্রেলিয়া চরম ক্ষেপে যায়।

ঐ মাসেই অস্ট্রেলিয়ার যাদুঘর বোর্ডের একজন চীনা বংশোদ্ভূত পরিচালককে বিদেশী হস্তক্ষেপ বন্ধের আইনের আওতায় অভিযুক্ত করা হয়।

তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা হুমকি একটি জটিল ব্যাপার এবং এর জন্য শুধু চীনা-অস্ট্রেলিয়ানদের সন্দেহ করা হিতে বিপরীত হতে পারে।


“অস্ট্রেলিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি যে হুমকি, স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতি যে হুমকি তা চীনা-অস্ট্রেলিয়ান জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে হয়তো আসছেই না, বরঞ্চ এই হুমকি আসছে সেই সব ব্যক্তিদের কাছ থেকে যারা রাজনীতি, ব্যবসা এবং গবেষণার ওপর প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা রাখেন, “ বিবিসিকে বলেন গবেষণা সংস্থা অস্ট্রেলিয়া স্ট্রাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের মাইকেল শুব্রিজ।

“বেইজিং-এর নজর ঐ সব ব্যক্তিদের ওপর। চীনের সমালোচনা রোধে এবং চীনের পক্ষে কথা বলতে এই মানুষগুলোর ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করে তারা।“


কিন্তু মিস ইয়ুন জ্যাং এবং তার মত অন্যান্যদের ভয়, অস্ট্রেলিয়া- বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া, চীন রাষ্ট্রের সাথে সাধারণ চীনা-অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের কাল্পনিক যোগসাজশ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত। “জাতিগত পরিচিতির চেয়ে নজর দেওয়া উচিৎ মানুষ কী করছে তার ওপর, “ সেনেটর তদন্তের শুনানিতে তিনি বলেন।

সরকারি চাকুরীতে চীনাদের সঙ্কট
শুধু জাতিগত পরিচিতির কারণে সন্দেহের শিকার হওয়ার বিষয়টি সবচেয়ে ভালো টের পাওয়া যায় অস্ট্রেলিয়ার সরকারি চাকুরীতে, বিশেষ করে যেসব জায়গায় জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কাজ হয়। অনেক চীনা-অস্ট্রেলিয়ান সরকারি আমলা বলেছেন তাদের ব্যাপারে সরকারের ভেতর সন্দেহ বাড়ছে।

“নিরাপত্তা নিয়ে চীনের ব্যাপারে উদ্বেগ তৈরি হওয়ার যৌক্তিক অনেক কারণ রয়েছে, “ বলেন চীনা বংশোদ্ভূত একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যিনি সরকারি নীতি নির্ধারণের সাথে জড়িত। উদাহরণ হিসাবে, তিনি সাইবার হামলার প্রসঙ্গ টানেন।

“কিন্তু চীনা বংশোদ্ভূত নাগরিকদের নিয়ে যেভাবে কথাবার্তা শুরু হয়েছে, যেমন কে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হওয়ার যোগ্য, কার বিরুদ্ধে আরো নিরাপত্তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন - এগুলো সত্যিই খুব খারাপ।“

নতুন যারা সরকারি চাকরিতে ঢুকেছেন বা নিচু পদে কাজ করেন, তারা বলছেন দেশপ্রেম প্রমাণের জন্য তারা চাপ বোধ করছেন এবং নীতি নির্ধারণী কোনো পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে খুবই সতর্ক থাকতে হচ্ছে কারণ তারা ভয় পাচ্ছেন তাদের কথার নানা অর্থ করা হতে পারে ।

“আমি যদি ককেশিয়ান অস্ট্রেলিয়ান হতাম তাহলে অনেক খোলাখুলি কথা বলতে পারতাম, “ বিবিসিকে বলেন মি, অ্যান্ড্রু চেন। “কিন্তু আপনি যদি জাতিগত চীনা হন, তাহলে মানুষ ধরেই নেবে আপনি চীনের দালাল। এদেশে এখন এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।“

যে কজন সরকারি কর্মকর্তা বিবিসির সাথে কথা বলেছেন তারা ভয়ে নাম, প্রকাশ করতে চাননি। তাদের অনেকে বলেছেন, সহকর্মীরা এখন তাদের অতীতের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করেন।

এবং যেসব কর্মকাণ্ডকে একসময় বাড়তি যোগ্যতা হিসাবে দেখা হতো, সেগুলোকেই এখন সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। যেমন - চীন সরকার পরিচালিত কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে চীনা ভাষা শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা বংশোদ্ভূতদের কোনো ফোরামে সংশ্লিষ্ট হওয়া বা স্রেফ পারিবারিক কারণে বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে চীনে যাওয়া।

তারা আরো বলছেন যে চাকরিতে চীনা-অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র দিতে বিলম্ব করা হচ্ছে, এবং তাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর অন্যদের চেয়ে বেশি করা হচ্ছে।

“আমার একজন সাবেক সহকর্মী তিন বছর আগে সরকারি চাকরিতে ঢোকে- কিন্তু এখনও সে নিরাপত্তা ছাড়পত্র পায়নি, “ বিবিসিকে বলেন চীনা বংশোদ্ভূত একজন সিনিয়র উপদেষ্টা। কিন্তু তিনি বলেন, এই ছাড়পত্র পেতে ছয় মাসের বেশি লাগে না।


চীনা বংশোদ্ভূত নাগরিকরা বলছেন, এই ধরনের বিলম্ব চাকরিতে তাদের কেরিয়ারে বাধা তৈরি করছে। এমনকি অনেকে সরকারি চাকরিতে ঢুকতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এরকম দুজন সরকারি চাকুরিজীবী বলেছেন, নিরাপত্তা ছাড়পত্র না আসায় কাজের জায়গায় কিছু দায়িত্ব থেকে তাদের সরে আসতে হয়েছে।

প্রতিরক্ষা বিভাগ চীনা-অস্ট্রেলিয়ানদের ছাড়পত্র নিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি, তবে একজন মুখপাত্র বলেছেন নিরাপত্তা ছাড়পত্র “কতগুলো বিষয়ের“ ওপর নির্ভর করে। “যদি কোন আবেদনকারী কখনো বিদেশে বসবাস করে থাকেন তাহলে তার দেওয়া প্রমাণাদি বিদেশী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাচাই করতে হয়।

গবেষক মি শুব্রিজ বলেন কোনো সরকারি কর্মকর্তা যদি এমন দেশে যান - যেমন রাশিয়া, চীন বা উত্তর কোরিয়া, যেখান থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া কঠিন - তাহলে নিরাপত্তা ছাড়পত্র পেতে সময় লাগে।

তিনি বলেন, যেসব অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের চীনে পরিবার রয়েছে, বন্ধু রয়েছে বা চীনের সাথে অন্য কোনো সম্পর্ক রয়েছে তাদের ব্যাপারে সরকার বিশেষ সতর্ক - কারণ সরকার মনে করে এসব মানুষের ওপর চাপ তৈরি করা চীনের জন্য সহজ।

“মানুষকে এভাবে ব্যবহার করার রেকর্ড চীনা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে।“ তবে মি শুব্রিজ একইসাথে বলেন, চীনে বসবাসের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন লোকজনকে চাকরি না দেওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে।

একজন সরকারি আমলা বিবিসিকে বলেন, “ধরুন আপনি চীনা নীতি সম্পর্কিত কোনো টিমে কাজ করেন। স্বাভাবিকভাবে আপনি এমন কিছু লোক চাইবেন যারা চীনা বংশোদ্ভূত। - এখন চীনের ভেতরের খবর রাখে এমন লোক যদি নিরাপত্তা ছাড়পত্র না পায়, তাহলে আপনি আপনার টিমে সত্যিকারের বিশেষজ্ঞ পাবেন না।“‘

অষ্ট্রেলিয়ান মূল্যবোধের অগ্নি পরীক্ষা‘
চীনা বংশোদ্ভূত কিছু মানুষকে চীন সরকার তাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে - এমন সম্ভাবনা পুরোপুরি নাকচ করছেন না চীনা-অস্ট্রেলিয়ান সমাজকর্মী জেসন ইয়াট-সেন লি। কিন্তু তিনি বলেন, অনেক মানুষ সেই ফাঁদে পা দেবেন কিনা তা নির্ভর করে তিনি নিজেকে কতটা অস্ট্রেলিয়ান রাষ্ট্র এবং সমাজের অংশ মনে করেন তার ওপর।

তিনি বলেন, চীন-অস্ট্রেলিয়ার বিরোধ “আমাদের মূল্যবোধ এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানের ওপর আমাদের আস্থার জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা।“

সরকারি নিরাপত্তা গোয়েন্দা বিভাগ অনেকদিন ধরেই সতর্ক করছে চীনা সম্প্রদায় যেন নিজেদের বিচ্ছিন্ন বোধ না করে কারণ চীনের ব্যাপারে গোয়েন্দা তৎপরতার জন্য এরাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে।

মি. শুব্রিজ বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যেন এমন ভাষা ব্যবহার না করেন যেটা সমাজের ঐক্যের পরিপন্থী, এবং তেমন আচরণ চীনা সরকারের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার সমান হবে।“

মি. লি মনে করেন, মূল সমস্যা আস্থা। “অস্ট্রেলিয়ানরা কি তাদের চীনা-অস্ট্রেলিয়ান সহকর্মী, প্রতিবেশী বা বন্ধুদের বিশ্বাস করেন? এবং যে সমাজে তারা বাস করছেন তার ওপর চীনা অস্ট্রেলিয়ানদের কি এই আস্থা রয়েছে যে তারা সমান সুযোগ পাবেন এবং আইন তার প্রতি বৈষম্য করবে না?“

“আমরা যদি আমাদের পাঁচ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে বিশ্বাস না করি, তাহলে তা হবে উদার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চরম বিরোধী, এবং সেটা বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের চেয়ে আমাদের গণতন্ত্রের জন্য বড় ক্ষতি বয়ে আনবে,“ বলেন মি লি।

*অ্যান্ড্রু চেন একটি ছদ্মনাম

-বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

আরও পড়ুন

avertisements 2