avertisements 2

১১ বছর ধরে তিস্তা চুক্তি আটকে থাকা লজ্জাজনক: মোমেন

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩১ মে,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৪৬ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর পানি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক এই নদীর পানির ন্যায্য পাওনা নিশ্চিতে তাই দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু যে কারণেই হোক, বাংলাদেশের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি এখনও। এই বিষয়টিকেই দুর্ভাগ্যজনক এবং লজ্জাজনক বলে উল্লেক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সোমবার (৩০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নিয়ে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের মধ্যেই ঢাকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নেওয়ার চেষ্টা করছে ভারত।

ঢাকা ও নয়াদিল্লি জুন মাসে উভয় পক্ষের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক যৌথ পরামর্শমূলক কমিশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এটাই জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফরের পথ খুলে দেবে।

কিন্তু দুই দেশের মধ্যে একটি বিতর্কিত সমস্যা অমীমাংসিত রয়ে গেছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। আর তা হচ্ছে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি। এই পরিস্থিতিতে দিন দু’য়েক আগে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের গুয়াহাটিতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নদী কনফারেন্স শুরু হয়।

দু’দিনব্যাপী এই সম্মেলনের সাইডলাইনে রোববার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা গত ১১ বছর ধরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে পারিনি। ভারতের সঙ্গে আমাদের ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। আমরা সকল নদীর যৌথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পানি ভাগাভাগিসহ একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। মূলত উভয় দেশের নদীর পাড়ের মানুষের মঙ্গলের জন্যই যৌথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।’

দীর্ঘ ১১ বছর ধরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি আটকে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা লজ্জাজনক। আমরা প্রস্তুত ছিলাম, তারাও প্রস্তুত ছিল, কিন্তু সেই চুক্তি করা হয়নি। ভবিষ্যতে পানির জন্য বড় ধরনের হাহাকার দেখা দেবে এবং এর জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’

ড. মোমেন বলেন, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় চীনে মাত্র ৩ শতাংশ, ভারতে মাত্র ৬ শতাংশ মানুষের জীবনযাপন নদীর কারণে প্রভাবিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ২৩ শতাংশ মানুষ ও তাদের জীবনযাত্রা প্রভাবিত হয়ে থাকে। এককভাবে একটি দেশের আন্তঃসীমান্ত নদীর বিষয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন করা উচিত নয়।

‘আমাদের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার বাসিন্দাদের সবার একসঙ্গেই দেখা উচিত, সেটি চীনের উন্নয়ন হোক বা ভারত বা বাংলাদেশের। আমাদের সবাইকে সমগ্র অববাহিকা এবং এর জনগণের ওপর প্রভাব নিয়ে ভাবতে হবে’ বলেন ড. মোমেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের চিতামু হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়ে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে নীলফামারী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। ৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটির মূল এলাকাগুলো ১৯৪৭ সালে ভারতকে বরাদ্দ দেয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে।

২০১১ সালে ভারত তিস্তা নদীর ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ পানি বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে সম্মত হয় এবং ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ পানি ধরে রাখতে সম্মত হয় দেশটি। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে চুক্তিটি স্বাক্ষর করা হয়নি। এদিকে পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিস্তার ভারতীয় অংশে গজলডোবায় একটি বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশ অংশে পানিপ্রবাহ প্রায় শূন্যে নেমে আসে। এতে তিস্তার ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ অংশে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2