দূতাবাসগুলো আ.লীগের প্রচার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে: ফখরুল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৪৬ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
সরকার বিদেশের বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে দলীয় প্রচারের কাজে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার চলমান অপতৎপরতার সর্বশেষ প্রমাণ হচ্ছে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস ক্যাডার সমন্বয়ে গঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দলীয় তৎপরতা। পৃথিবীর দেশে দেশে বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষা দেয়াই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল দূতাবাসগুলোর দায়িত্ব।
তিনি বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ওই দূতাবাস সমূহের সকল ব্যয় বহন করা হয় এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকায়ই সকল দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান করা হয়। অথচ, অপেশাদার উপায়ে সেই প্রতিষ্ঠানকেও দলীয়করণ করে জনগণের স্বার্থ বিরোধী কাজে লাগানো হচ্ছে, মিথ্যাচার এবং প্রতারণা করার কাজে লাগানো হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি , ২০২২ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল কমিটির চেয়ার জনাব গ্রেগোরি ডব্লিউ মিকস নিউ ইয়র্কের কুইন্স এলাকায় তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছিলেন। উল্লেখ্য, কংগ্রেসম্যান গ্রেগোরি মিকসের নির্বাচনী আসনের আওতাধীন ‘জ্যামাইকা এলাকায়’ বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি আমেরিকানদের বসবাস। যারা ওই এলাকার ভোটারও বটে। যার প্রধান উদ্যেক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের একজন নেতা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে প্রসঙ্গক্রমে মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সাম্প্রতিক ‘নিষেধাজ্ঞা’ র সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের এলিট ফোর্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। কংগ্রেসম্যান যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগনেটস্কি আইনের কথা উল্লেখ করেন যে আইনের অধীনেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বিদেশি যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, লজ্জাজনক এবং ঘৃণিত পদ্ধতিতে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে কংগ্রেসেম্যানের বক্তব্যের একটি বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। যদিও ঐ অনুষ্ঠানে মার্কিন নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ দূতাবাস আমন্ত্রিত ছিলো না। স্পষ্টতই একটি দলীয় মাধ্যমকে ব্যবহার করে ওই বক্তব্যকে বিকৃত করে বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা-বাসসকে দিয়ে এবং বিদেশে প্রচার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এসব ঘটনা গুলো বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণ করেছে গোটা রাষ্ট্রকে সরকার কিভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য দলীয় হাতিয়ারে পরিণত করেছে। যেভাবে বাকশাল এর মাধ্যমে একদলীয় সরকার কায়েম করা হয়েছিল সেভাবে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে এখন তারা ব্যবহার করছে। সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেই কেবলমাত্র অবৈধ ক্ষমতা প্রলম্বিত করার কাজে লাগিয়ে চলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।