avertisements 2

কোরআন অবমাননার পক্ষে যে দেশগুলো ভোট দিল

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:৫৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

সম্প্রতিক সময় সুইডেনে এবং জার্মানিতে ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনের কিছু পাতা পুড়িয়ে দেয়া হয়। এর প্রতিবাদে সারা বিশ্বের মুসলিম দেশগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে। এবং পাকিস্তান ও ওআইসির অনুরোধে জাতিসংঘে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পক্ষে-বিপক্ষে ভোট পড়েছে। পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে। বিপক্ষে ১২ টি দেশ ভোট দিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও গোঁড়ামির ওপর একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। ওই প্রস্তাব পাশে জাতিসংঘে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশ। এছাড়া আরও অনেক অমুসলিম দেশও এ প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে।

বুধবার প্রস্তাবটি পাস হয়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটার বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, জাতিসংঘের এ প্রস্তাবটি মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে তাদের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

গত মাসে পাকিস্তান ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা ওআইসিভুক্ত মুসলিম দেশগুলো স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। ওই সময় এক ইরাকি অভিবাসী পবিত্র ঈদুল আজহার সময় কোরআনের অবমাননা করেছিল। এর ফলে মঙ্গলবার জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থায় জরুরি আলোচনা শুরু হয়।

এরপর সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোট দেয় - আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, ক্যামেরুন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, গ্যাবন, গাম্বিয়া, ভারত, আইভরি কোস্ট, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালাউই, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরক্কো, পাকিস্তান, কাতার, সেনেগাল, সোমালিয়া, দক্ষিন আফ্রিকা, সুদান, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনাম। মোট ২৮টি দেশ এ প্রস্তাবের পক্ষে ভ্টে দেয়।

জাতিসংঘে ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ১২টি দেশ। ওই দেশগুলো হচ্ছে, বেলজিয়াম, কোস্টারিকা, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টিনিগ্রো, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

কোরআন পোড়ানোর ঘটনা বিরুদ্ধে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল - মোট সাতটি দেশ। ওই দেশগুলো হচ্ছে, বেনিন, চিলি, জর্জিয়া, হন্ডুরাস, মেক্সিকো, নেপাল ও প্যারাগুয়ে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি একটি ভিডিও বিবৃতির মাধ্যমে জেনেভা-ভিত্তিক এ মানবাধিকার কাউন্সিলকে বলেছেন, আমাদের অবশ্যই এটা স্পষ্টভাবে দেখতে হবে যে এ (কোরআন পোড়ানোর) ঘটনাটি আসলে কী? এটা হলো ধর্মীয় ঘৃণার উস্কানি, বৈষম্য এবং সহিংসতা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা।

তিনি বলেন, এই ধরনের (ঘৃণ্য) কাজগুলো সরকারি অনুমোদনে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া এ (ঘৃণ্য) কাজকে দায়মুক্তিও দেওয়া হয়েছে। এ সময় ইরান, সৌদি আরব ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিলাওয়াল ভুট্টোর মতো ওই কোরআন পোড়ানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন।

এ বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বলেছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহার বন্ধ করুন। এ (পবিত্র কোরআন পোড়ানোর মতো) বিষয়ে নিরব থাকার মাধ্যমে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

ইউএনএইচআরসিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, মুসলমানদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্ম বা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে করা এসব উস্কানিমূলক কাজ সত্যিই আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক। এটা একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ভুল কাজ।

একইসাথে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা জ্ঞাপন করেছে সুইডিশ সরকার। তবে তারা এটাও বলেছে যে তাদের দেশে সমাবেশ, মতপ্রকাশ ও বিক্ষোভের স্বাধীনতা রয়েছে। এসব অধিকার সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত। সূত্র : আল-জাজিরা

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2