বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে নৈশপ্রহরী গ্রেপ্তার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:২৩ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
যশোরের মনিরামপুরের শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানের নৈশপ্রহরী আতাউর রহমানের (৩১) বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল মধ্যরাতে আতাউরের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ওই কিশোরী।
আতাউর শ্যামনগর গ্রামের আলী মুনসুরের ছেলে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরী এবং আতাউর একই গ্রামের বাসিন্দা। ভুক্তভোগী ওই কিশোরী অভয়নগরের নওয়াপাড়ার একটি পাটকলের শ্রমিক।
জানা যায়, আতাউর ২০১৬ সাল থেকে শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুক্তিভিত্তিক নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত। ধর্ষণ মামলা হওয়ায় এবার তাঁর চাকরির চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এর আগেও একবার বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে এক নারীসহ ধরা পড়ায় আতাউরকে চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) যোগেশ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় শ্যামনগর বাজারে ডাক্তার দেখিয়ে স্কুল মাঠ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ওই ভুক্তভোগী কিশোরী। আতাউর তখন স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই কিশোরীকে একা দেখতে পেয়ে আতাউর ডাক দেন। তিনি বারান্দায় উঠতেই আতাউর তাঁকে টেনে অফিসকক্ষে নিয়ে যান। তখন জোর করে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন আতাউর।
যোগেশ মণ্ডল বলেন, ‘ঘটনাটি দেখে ফেলেন আশপাশের লোকজন। তখন তাঁরা আতাউরকে ধরে মারধর করেন। খবর পেয়ে আমরা আতাউর ও কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।’
এদিকে স্থানীয়রা জানান, ওই তরুণীর বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে খানিকটা দূরে। আতাউরের সঙ্গে তাঁর পূর্বের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সেই সূত্র ধরে সোমবার সন্ধ্যায় তাঁরা একত্র হন। বিদ্যালয়ের পাশে শ্যামনগর বাজার। সোমবার সন্ধ্যায় সেখানে নির্বাচনী সভা চলছিল। সভার লোকজন তাঁদের বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে ঢুকতে দেখে ফেলেন। তখন তাঁরা এসে দুজনকে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে ধরে ফেলেন।
স্থানীয়রা বলেন, লোকজন দেখে আতাউর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তাঁকে গণপিটুনি দিয়ে অফিসকক্ষে ওই নারীর সঙ্গে আটকে রাখা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, আতাউরের অত্যাচারে গ্রামের লোকজন অতিষ্ঠ। পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে গ্রামের বহু নিরীহ মানুষকে তিনি হয়রানি করেছেন। এ ছাড়া সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তিনি মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়েছেন।
এদিকে আতাউরের বহিষ্কারের দাবিতে মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকালে স্কুল ঘেরাও করেন এলাকাবাসী। এ সময় তাঁরা গণস্বাক্ষর দেন।
মনিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, আতাউরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
মনিরামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘আতাউরের ঘটনা শুনেছি। তাঁর নিয়োগ চুক্তিভিত্তিক। নিয়োগ চুক্তি বাতিল করে কাগজপত্র আমার অফিসে পাঠাতে প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দিয়েছি।’