মসজিদের বারান্দায় শহীদ মিনার, দেওয়া হয় না ফুল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:০৮ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:২৮ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা সদরের কাচারী জামে মসজিদের বারান্দায় অযত্ন-অবহেলায় দাঁড়িয়ে আছে একটি শহীদ মিনার। দীর্ঘদিন যাবৎ শহীদ মিনারটি প্রতিষ্ঠিত হলেও শহীদদের স্মরণে ফুল দেওয়া হয় না।
এতে একদিকে যেমন শহীদ মিনারের অবমাননা হচ্ছে অন্যদিকে মসজিদের ভিতরে পড়ে যাওয়ার মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতেও সমস্যা হচ্ছে। ১৯৬৮ সালে উপজেলা সদরের জামতলায় বর্তমান ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন সরকারি জায়গায় এই শহীদ মিনারটি নির্মাণ করেন।
পরে ১৯৭৪ সালে ওই শহীদ মিনারটিকে সংস্কার করে আরও বড় করা হয়। তখন থেকে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার হিসেবে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন, বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, বেসরকারি সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী এই শহীদ মিনারেই ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেন। এ সময় ওই শহীদ মিনারের পাশেই স্থানীয় লোকজন একটি নামাজ খানা তৈরি করে। ধীরে ধীরে নামাজের জায়গা বড় হয়ে শহীদ মিনারকে ঘিরে নির্মিত হয় একটি বড় মসজিদ।
এতে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হলে গত ২০০০ সালে সরকারিভাবে উপজেলা সদরের স্টেশন রোড এলাকায় আরও একটি শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে পুরনো শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া বন্ধ হয়ে যায় ও শহীদ মিনারটি অযত্ন, অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে।
এ ব্যাপারে ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ইউনুছ আলী মণ্ডল বলেন, শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ নিমারে ফুল না দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এখানে শহীদ মিনারটির প্রয়োজন না থাকলে পরিত্যক্ত অবস্থায় না ফেলে রেখে এখান থেকে সরিয়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিলে এর মর্যাদা রক্ষা পাবে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ও নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এটিএম ফয়জুর সিরাজ জুয়েল জানান, বর্তমানে এই শহীদ মিনারটি পরিত্যক্ত ঘোষিত না হলেও দীর্ঘদিন ধরে এখানে ফুল দেওয়া হয় না। তাই মসজিদের মুসল্লিদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে ইতি পূর্বে শহীদ মিনারটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবরে আবেদন করা হয়েছিল।
স্থানীয়রা জানান, ‘স্থানীয় লোকজন স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এই মসজিদে নামাজ আদায় করে আসছে। বর্তমানে মুসল্লি বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদ সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এতে শহীদ মিনারটি মসজিদের বারান্দার ভিতরে পড়ে গেছে। তাই শহীদ মিনারটি স্থানান্তরিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে কুলসুম জানান, শহীদ মিনারটির বর্তমান অবস্থান মসজিদের বারান্দায় হওয়ায় এতে ফুল দেওয়া হয় না। মসজিদ এবং শহীদ মিনার বিষয় দুটি স্পর্শকাতর হওয়ায় উপর মহলকে জানিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।