মেরে ফেললে ফেলুক, কাফনের কাপড় পরে প্রস্তুত আছি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:৫৪ পিএম, ১৯ অক্টোবর,সোমবার,২০২০ | আপডেট: ১২:১০ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি প্রার্থী শওকত হোসেন হাওলাদারের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রবিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল চত্বর সংলগ্ন বিএনপি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি প্রার্থী শওকত হোসেন হাওলাদারের পক্ষে এই অভিযোগ করেন বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হোসেন খান।
হামলায় বিএনপি প্রার্থীর ছেলে কামাল হাওলাদার, ভাতিজা সাইফুল ইসলাম, রাজা হাওলাদার ও আরিফ তালুকদারসহ আট নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এ সময় আবুল হোসেন খান বলেন, শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা কোন কারণ ছাড়াই কলসকাঠী বাজারে বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং কর্মীদের বেদম মারধর করে। পরে তারা নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে বিএনপি উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে। এ অবস্থায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন বলেন, নির্বাচন থেকে বিএনপি প্রার্থী শওকত হোসেন হাওলাদারকে দূরে রাখতে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতাকর্মী, সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। নির্বাচনী এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। ভোট ডাকাতির নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে শনিবার বিকেলে বিএনপি প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
এবায়দুল হক চাঁন আরও বলেন, এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তাদের দলীয় অফিস ভাঙচুরের নাটক সাজিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার অপচেষ্টা করছেন। এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অবস্থা থাকলে কোনভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনী কর্মকর্তা ও মাঠ প্রশাসনকে কার্যকরে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাই।
বিএনপি প্রার্থী শওকত হোসেন হাওলাদার বলেন, শনিবার বিকেলে হামলার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে উল্টো থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগ এনে বিএনপির ৬০ নেতাকর্মীর নামে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। গ্রেফতারের ভয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছেন। কেউ কেউ এলাকা ছেড়েছেন।
শওকত হোসেন হাওলাদার বলেন, হামলা-গ্রেফতারে আমি ভয় পাই না। তারা আমাকে মেরে ফেললে ফেলুক। আমি কাফনের কাপড় পরে প্রস্তুত আছি। যত বাধাই আসুক শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকব।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফয়সাল ওয়াহিদ মুন্না এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শনিবার বিকেলে কলসকাঠি বাজারে আমাদের শেষ নির্বাচনী প্রচার মিছিল চলকালে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা আওয়ামী লীগের অফিস ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেন।
এ সময় বাধা দিতে গেলে আমাদের তিন কর্মী আহত হন। বিএনপি প্রার্থী শওকত হোসেন হাওলাদারের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে আমার কর্মী বা কোনো সমর্থক হামলা চালায়নি। আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, কলসকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। অভিযোগে ত্রুটি থাকায় সংশোধন করে আনার জন্য বলা হয়েছে। তবে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচন আগামী ২০ অক্টোবর। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফয়সাল ওয়াহিদ মুন্না ও বিএনপির প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শওকত হোসেন হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।