করোনা ভাইরাস: মহামারিতে বিধ্বস্ত ভারতের অর্থনীতির মাথা তুলে দাঁড়ানো যে কারণে কঠিন হবে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:৩০ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ১১:৪১ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ভারতের অর্থনীতি চলতি অর্থ বছরে রেকর্ড পরিমাণ সঙ্কুচিত হয়েছে - দেশটির সরকার এই তথ্য প্রকাশের পর গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় লকডাউন শুরুর পর তিন মাসে জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদন সঙ্কুচিত হয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
উৎপাদন, নির্মাণ, হোটেল, পরিবহন, আবাসনসহ অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই সঙ্কোচন দেখা গেছে। এপ্রিল থেকে জুন -- এই তিন মাসের জিডিপি-র সরকারি হিসাবে দেখা যাচ্ছে কৃষি ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রেই সঙ্কোচন হয়েছে অর্থনীতির।
লকডাউনের কারণ দেশটির অর্থনীতি প্রায় স্তব্ধ হয়ে থেকেছে কোভিড মহামারির সময়কালে - শুধু খাদ্যপণ্য এবং ওষুধ উৎপাদন ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়া ওই সময়কালে সব কিছুই বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেজন্য একমাত্র কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩.৪ %।
কিন্তু শুধুই কি লকডাউনের জন্য অর্থনীতির এই রেকর্ড সঙ্কোচন?
অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিত বসু বলছিলেন লকডাউনের আগে থেকেই ক্রমাগত সঙ্কুচিত হচ্ছিল ভারতের অর্থনীতি, লকডাউন শুধু 'মরার ওপর খাঁড়ার ঘা' দিয়েছে।
"গত দুবছর ধরে প্রতিটা ত্রৈমাসিকেই ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ক্রমাগত কমেছে। বিনিয়োগ যেমন কমেছে, তেমনই কমেছে রপ্তানি। অর্থনীতির মূল অভিমুখটাই ছিল অনেকদিন ধরেই নিম্নগামী। তারওপরে এই লকডাউন হয়েছে - পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে কড়া লকডাউন হয়েছে। তার প্রভাব কোভিড সংক্রমিতর সংখ্যায় খুব একটা দেখিনি - কিন্তু অর্থনীতির একেবারে যাকে বলে বারোটা বেজে গেছে," বলছিলেন ড. প্রসেনজিত বসু।
প্রায় ২৪ % সঙ্কোচনের যে হিসাব দেওয়া হয়েছে, তাও অসম্পূর্ণ বলে সরকার নিজেই জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর অর্থ হল সঙ্কোচনটা আরও বেশি হওয়ারই সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ অসংগঠিত ক্ষেত্রের সম্পূর্ণ হিসাব হয়তো জোগাড় করা যায় নি।
জনজীবনের স্থবিরতার প্রতিফলন
অসংগঠিত ক্ষেত্রেই জড়িত রয়েছেন কোটি কোটি মানুষ। এদের মধ্যে যেমন পরিযায়ী শ্রমিকরা আছেন, তেমনই আছেন ইঁটভাটার শ্রমিক বা শহর-গ্রামের রিক্সাচালক বা ছোটখাটো দোকানকর্মী।
লকডাউন পর্বে এদের অনেককেই অনাহারে থাকতে হতো, যদি না বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ছাত্রছাত্রীরা এদের মধ্যে খাবার বিলি করতেন।