avertisements 2

স্বজনের লোভ নাকি ক্ষোভের আগুনে পুড়ল শিশুটি!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:১১ পিএম, ৯ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ০৮:২২ এএম, ২৩ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া গ্রামের আল আমীন নামে পাঁচ বছরের এক শিশুকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে ওই শিশুটি অগ্নিদগ্ধ হয়েছে।

শিশুটির গায়ে আগুন দেয়া নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বজনের অর্থের লোভ নাকি ক্ষোভের আগুনে পুড়ল শিশুটির শরীর, সেটি পরিষ্কার নয়। তবে স্বজনের আগুনেই তার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়েছে সেটি পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে পরিষ্কার হয়েছে।

যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাফিকুর রহমান স্বপন জানান, শিশু আল আমীনের শরীরের ৭০ ভাগ পুড়ে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়েছে। তবে সেখানে নিয়ে চিকিৎসা করার অর্থ না থাকায় হাসপাতাল ও রোগী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করা হচ্ছে।

আল আমীনের মা তামান্না দাবি করেছেন, শিশুটির পিতা তাকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। তবে শিশুর পিতা হাজী দাউদ সরদারের দাবি, তিনি সন্তানের শরীরে আগুন দেয়নি। শিশুটির নানি সাকিরন বিবি তার সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য এ নাটক সাজিয়েছেন। শিশুকে গুরুতর অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্বজনরা জানিয়েছেন, আল আমীন বর্তমানে যশোর সদরের এড়েন্দা গ্রামে তার মা তামান্না ও নানি সাকিরন বিবির সঙ্গে বসবাস করে। গত রোববার নানি সাকিরন বিবি আল আমীনকে সঙ্গে নিয়ে বাঁকড়া গ্রামে তার পিতার বাড়িতে বেড়াতে যান। এ খবর জানতে পারেন একই গ্রামের বাসিন্দা শিশুটির পিতা দাউদ সরদার।

বুধবার রাতে আল আমীন ও তার নানি সাকিরন বিবি একটি রুমে ঘুমিয়ে ছিল। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ঘরের জানালা দিয়ে পাটখড়ির মাধ্যমে মশারিতে আগুন দেয়া হয়। এ সময় আল আমীন চিৎকার দিলে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

অগ্নিদগ্ধ আল আমীনের মা তামান্না জানান, ছয় বছর আগে তিনি দাউদ সরদারের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। এ সময় তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করায় এক পর্যায়ে তার গর্ভে সন্তান আসে। আল-আমীনের জন্ম হয়। প্রথমে দাউদ অস্বীকার করলেও ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে আদালতে প্রমাণ হয় আল আমীন দাউদের সন্তান। এক পর্যায়ে দাউদ তামান্নাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এখন সন্তানের পরিচয় অস্বীকার করতে দাউদ সরদার সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করেছে।

দাউদ সরদার দাবি করেন, এ ঘটনা মীমাংসার জন্য তামান্নার মা সাকিরনকে ১২ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। আর প্রতি মাসে সন্তানের ভরণপোষণের জন্য দেন খরচ। সাকিরন তার কাছে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করছেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আল আমীনকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

তিনি দাবি করেন, একই ঘরে সাকিরন ও আল আমীন ঘুমিয়ে ছিলেন কিন্তু আল আমীন অগ্নিদগ্ধ হলেও সাকিরনের কিছু হয়নি। এটি বিশ্বাস করার মতো নয়। মূলত তার কাছ থেকে নতুন করে টাকা আদায় করতে নতুন নাটক সাজিয়েছেন সাকিরন। এ ঘটনায় সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2